• 'মুন্নাভাই'দের পাশে ‘সার্কিট’ অভীক!
    এই সময় | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • যোগ্যতা নেই তো কী, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে চিটিং করেছিলেন ‘মুন্না ভাই’ সঞ্জয় দত্ত। তাঁকে পাস করানোর জন্য এক মেধাবী ডাক্তারকে পরীক্ষায় বসিয়েছিলেন ‘সার্কিট’ আরশাদ ওয়ার্শি। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করে সেই মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তি হন মুন্নাভাই।‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’ সিনেমায় পরীক্ষা কেন্দ্রের ওই অনিয়মের সঙ্গে মিল পাওয়া যাচ্ছে এ রাজ্যের কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষাতেও। সৌজন্য অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। বাস্তবের ‘মুন্নাভাই’-দের পাস করাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ‘থ্রেট সিন্ডিকেট’। এক্ষেত্রে সার্কিটের ভূমিকা নেওয়ায় অভিযুক্ত অভীক। পার্থক্য একটাই, এই অনিয়মের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ উঠেছে। সিনেমায় যা ছিল না।

    সিবিআই জানতে পেরেছে, যাঁরা অভীক এবং বিরূপাক্ষদের দলে নাম লেখাতেন, তাঁরা মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষায় অতিরিক্ত সুবিধা পেতেন। পরীক্ষার কেন্দ্রে ওই ছাত্রছাত্রীরা যাতে নকল করতে পারেন, সে বন্দোবস্ত করতেন অভীক এবং তাঁর দলবল। এমনকী, একজন মেধাবী পরীক্ষার্থীর খাতা চলে যেত অন্যজনের কাছে। যাতে সেই পরীক্ষার্থী ভালো রেজাল্ট করতে পারেন। তার বিনিয়মে মোটা টাকার লেনদেন হতো।

    এমনকী, পরীক্ষার সুবিধার জন্য পড়ুয়াদের হাতে পৌঁছে যেত মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে যাবতীয় ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট। পরীক্ষা কেন্দ্রের সিসিটিভি-ও বন্ধ করে রাখা হতো। ওই সময়ের মধ্যে অনিয়ম চলত ভিতরে। শুধু তাই নয়, ঘড়ির কাঁটাও নিয়ন্ত্রণ করতেন অভীকের লোকেরা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাঁরা লেখা শেষ করতে পারতেন না, তাঁদের জন্য ঘড়ির কাঁটা উল্টো দিকে ঘুরিয়ে সময় কমিয়ে দেওয়া হতো।

    তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, উত্তরবঙ্গ, বর্ধমান, আরজি কর, জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ছাড়াও রামপুরহাট সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার সময়ে এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটত।

    আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন ওই হাসপাতালের প্রাক্তন হাউস স্টাফ আশিস পাণ্ডে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠলেও থ্রেট সিন্ডিকেট-এর মাথা হয়ে ওঠেন অভীক এবং বিরূপাক্ষ। এমনই দাবি করে আসছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। এই সিন্ডিকেট কখনও পরীক্ষার সময়ে পড়ুয়াদের ভয় দেখিয়ে, কখনও আবার হাসপাতালের প্রশাসনিক বিষয়ে নাক গলিয়ে তোলাবাজি করতেন বলে অভিযোগ।

    ইতিমধ্যে অভীক-বিরূপাক্ষকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সম্প্রতি আশিস পাণ্ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরীক্ষা দুর্নীতির বিষয়ে আরও কিছু তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সেই তথ্য প্রমাণিত হলে, বিপদ বাড়তে পারে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন আরএমও অভীক দে-র। এমনটাই সূত্রের খবর।
  • Link to this news (এই সময়)