ছাব্বিশে তৃণমূলের হাত ধরতেই কি বামেদের সঙ্গত্যাগ কংগ্রেসের?
আজকাল | ২৫ অক্টোবর ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: আসন্ন উপনির্বাচনে পৃথকভাবে লড়াই করছে বাম ও কংগ্রেস। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের পরে এবং ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলার রাজনীতিতে এই সমীকরণ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। অধীররঞ্জন চৌধুরীকে সরিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে শুভঙ্কর সরকার আসীন হওয়ার পর আসন্ন উপনির্বাচনে এককভাবে লড়াই করবে বাংলার কংগ্রেস।
অন্যদিকে, জোট না হওয়ার কারণ হিসেবে লাল শিবিরের অন্দরের সূত্রে খবর, ছাব্বিশের আগে এই উপনির্বাচনে এককভাবে লড়ে নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করে নিতে চাইছে বামেরাও। সিতাই, মাদারিহাট, নৈহাটি, হাড়োয়া, মেদিনীপুর, তালডাংরা, এই ছয়টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে ১৩ নভেম্বর। এরমধ্যে মাদারিহাট বিধানসভা আসনটি বিজেপির দখলে থাকলেও বাকি সবই তৃণমূলের দখলে। মেদিনীপুর আসনে সিপিআই ও মাদারিহাটে লড়বে আরএসপি। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের ক্ষেত্রে এই দুটি আসন নিয়ে কোনওরকম সমঝোতার পথে যেতে নারাজ দুই বাম শরিক।
অন্যদিকে, একুশের ভোট ও গত লোকসভা নির্বাচনে জোটবদ্ধ লড়াই বাংলার কংগ্রেসকে অক্সিজেন দিতে ব্যর্থ হয়ছে। হাত শিবিরের সূত্র বলছে, উপনির্বাচন হতে চলা বিধানসভা কেন্দ্রের জেলার কংগ্রেস সভাপতিরাও চাইছেন এই নির্বাচনে এককভাবে লড়াই করুক দল। তবে বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট না হওয়ার নেপথ্যে অন্য সমীকরণ দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাংলার মাটিতে নির্বাচনী বৈতরণী পাড় করতেই ছাব্বিশে তৃণমূল কংগ্রেসকে জোট করার প্রস্তাব দিতে পারে কংগ্রেস। এখন থেকে সেই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতেই বামেদের সঙ্গত্যাগের সিদ্ধান্ত হাত শিবিরের। প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ২০১১ সালে বাংলার ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পরবর্তী সময় বাংলায় জোড়াফুল শিবির ত্যাগ করে কাস্তে-হাতুড়ি হাতে তুলে নেয় জাতীয় কংগ্রেস।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সূত্র বলে, তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের কঠোরপন্থি তৃণমূল বিরোধিতার কারণেই আলোচনায় বসেও বাংলায় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ঘাসফুল শিবির। একইসঙ্গে লোকসভা ভোটে বাংলায় নির্বাচনী প্রচার এড়িয়ে গিয়েছেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা সহ জাতীয় কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের নেতৃত্বরাও। চব্বিশের ভোটে নিজের গড় বহরমপুর থেকে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয় অধীরকেও।
বিধানসভা নির্বাচনে জোট করা নিয়ে প্রকাশ্যে কংগ্রেস বা তৃণমূল কংগ্রেস কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও রাজনৈতিকমহল বলছে, বঙ্গ কংগ্রেসে নেতৃত্বে বদল হতেই ছাব্বিশের নির্বাচনী লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সমীকরণ বদলের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
বিশেষ সূত্রে খবর, কলকাতা কলকাতা মেট্রো ইউনিয়নের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার প্রক্রিয়ার সলতে পাকানো শুরু করতে পারে হাত শিবির। কলকাতা মেট্রো ইউনিয়নের ভোটে তৃণমূলের জোটসঙ্গী হতে পারে কংগ্রেস। আর কলকাতা মেট্রো ইউনিয়নের ভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট হলে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে হাত ধরতেই পারে জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোট শরিক এই দুই দল। তবে শেষ পর্যন্ত যদি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের জোট হয়, তাহলে তা হবে বাংলার রাজনীতিতে আরও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।