নুয়ে পড়েছে ধানের গাছ, পূর্ব বর্ধমানে চাষিদের মাথায় হাত
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ঝড় হয়নি। জেলায় শুধু জোরালো হাওয়া বয়ে গিয়েছে। তাতেই পূর্ব বর্ধমান জেলার ধান চাষিদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। হাওয়ায় ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সুগন্ধী ধান গাছের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের প্রায় ১৭ হাজার ২১৭ হেক্টর জমির এই অবস্থা হয়েছে। তাতে অবশ্য ব্যাপক ক্ষতি হবে না বলে কৃষি আধিকারিকদের দাবি। তাঁরা বলেন, সুগন্ধী ধান গাছ অনেকটাই লম্বা হয়। জোরালো হাওয়া দিলেই তা নুয়ে পড়ে। বিশেষ পদ্ধতিতে ধান গাছ বাঁধা যায়। সেটা করতে পারলে ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো যাবে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ‘দানা’র প্রভাবে জেলায় খুব বেশি ক্ষতি হয়নি।
চাষিরা বলেন, শনিবার আর ভারী বৃষ্টি না হলে চাষে তেমন ক্ষতি হবে না। শুক্রবারের বৃষ্টিতে অনেক জমির ভালো হয়েছে। ওই জমিগুলিতে জলের দরকার ছিল। ধান পুষ্ট হয়ে গিয়েছে। জলের সমস্যা না থাকায় ফলন আরও ভালো হবে। খণ্ডঘোষের ধান চাষি অনিল বাগদি বলেন, গোবিন্দভোগ ধান গাছ লম্বা হওয়ার কারণেই তা পড়ে গিয়েছে। বহু জমির ফলন কমে যাবে। এবছর গাছ দেখে ভালো ফলনের আশা করেছিলাম। শেষ মুহূর্তে প্রকৃতি আশায় জল ঢেলে দিল। স্বর্ণ ধান গাছের শিষও ভারী হয়েছিল। হাওয়ায় সেই ধানও নুয়ে পড়েছে। তবে ঝড় হলে চাষিদের পথে বসতে হতো।
পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষি আধিকারিক(ডিডিএ) নকুল মাইতি বলেন, ধান গাছ নুয়ে পড়লে সব সময় ক্ষতি হয় এমনটা ভাবার কারণ নেই। তবে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পর জমির দিকে চাষিদের নজর রাখতে হবে। কোনও পোকার আক্রমণ হলে ব্যবস্থা নিতে হবে। উদ্যান পালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিতে জল জমে গেলে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লঙ্কা, টোম্যাটো চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই সময় দ্রুত জল বের করে দিতে পারলে চাষিরা লাভবান হবেন। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ব্লকের আধিকারিকদের শনিবার থেকে মাঠের পরিস্থিতি দেখার জন্য বলা হয়েছে। ধান জমি কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে। চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, ডিভিসির ছাড়া জলে জেলায় বেশ কিছু ধান জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিমা সংস্থার আধিকারিকরা ও কৃষি আধিকারিকরাও মাঠে গিয়েছিলেন। ক্ষতির পরিমাণ চিহ্নিত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।