• ‘ডানা’র দাপটে জমিতে ধান নুয়ে পড়েছে, ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বন্যার জেরে আগেই অনেক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ধান চাষ। ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে সেই ক্ষতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা। শিষ ধরার মুখে বহু জমির ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। রাজ্যের তরফে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চাষের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কৃষিদপ্তরও ক্ষয়ক্ষতির হিসেব কষছে।

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার প্রতিটি ব্লকেই জমির ধান নুয়ে পড়ার খবর এসেছে। নিচু জমিগুলিতে জল দাঁড়িয়ে পড়েছে। তাই চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। হুগলির কৃষি দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর(প্রশাসন) মৃত্যুঞ্জয় মর্দনা বলেন, বিভিন্ন ব্লকের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ জমির ধান নুয়ে পড়েছে বলে খবর এসেছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। রাজ্যের কাছে রিপোর্টও পাঠানো হবে। 

    উল্লেখ্য, আগস্টের শেষে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ধানজমির একাংশ জলমগ্ন হয়। সেপ্টেম্বরে বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেইসময় খানাকুলের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় এক মাস জল জমেছিল। সেখানে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অন্যান্য ব্লকেও ধানচাষ মার খেয়েছে। বর্তমানে অনেক জায়গাতেই ধান ফলতে শুরু করেছিল। ‘ডানা’র ঝাপটে অধিকাংশ জমির ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। তাতেই চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। চাষিদের দাবি, বিপুল খরচ করে ধান চাষ করা হয়েছিল। কিছুদিন পরেই ধান কাটতে হতো। কিন্তু, ডানার প্রভাবে জমিতে ধানগাছ নুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়লাম।  শুক্রবার সকাল থেকে আরামবাগ মহকুমায় নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝিরঝিরে আবার কখনও মুষলধারে। তাতেই ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। গোঘাটের বড়মা এলাকার চাষি শেখ রহমত আলির বিঘা আটেক জমিতে ধানের চাষ আছে। তিনি বলেন, সকালে মাঠে গিয়ে দেখলাম, বহু ধানগাছ শুয়ে গিয়েছে। নিচু জমিগুলিতে জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। নুয়ে পড়া ধান নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। 

    খানাকুলের ঘোষপুর এলাকার চাষি নিমাইচন্দ্র জানা বলেন, প্রায় বিঘা সাতেক জমিতে আমাদের ধান চাষ রয়েছে। সম্প্রতি বন্যায় ধান চাষের ক্ষতি হয়। সপ্তাহ খানেক আগে কীটনাশক দেওয়া হয়েছিল। তাতে কিছুটা হলেও ফলনের আশা ছিল। কিন্তু ‘ডানা’র ধাক্কায় ধান গাছ শুয়ে গিয়েছে। শস্য বিমা করানো হয়েছে। কিন্তু, তাতে আর কত ক্ষতিপূরণ মিলবে?  পুরশুড়ার নিমডাঙি এলাকার চাষি অমিতাভ সামুই বলেন, সকাল থেকে নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। বন্যার সময় দু’দিন ধান গাছ জলে ডুবেছিল। তাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তারপর অনেক চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছিল। শিষ চলে এসেছে। কিন্তু ফের বৃষ্টি ও ঝড়ের ধাক্কায় ধান নুয়ে পড়ল। এরপর আর ফলন হবে বলে মনে হয় না।
  • Link to this news (বর্তমান)