নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ‘ডানা’-র আগমন বার্তা পেয়েই আতঙ্ক গ্রাস করেছিল পুরুলিয়ার চাষিদের। ধান ও সব্জি চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছিলেন চাষিরা। যদিও তা হল না। বরং ঘূর্ণিঝড়ের জেরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা কার্যত শাপে বর হয়েছে পুরুলিয়ার কৃষকদের।
জেলা কৃষি অধিকর্তা আদিত্য দুয়ারি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিশেষত ধান ও সব্জিচাষে প্রভূত ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু পুরুলিয়ার ঝড়ের তেমন দাপট দেখা যায়নি। যেটুকু বৃষ্টি হয়েছে তা ধান চাষের জন্য বরং অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। ফলে ক্ষতির তুলনায় লাভই হয়েছে পুরুলিয়ার চাষিদের।’ কৃষি আধিকারিকের সংযোজন, ‘আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাও আমরা একবার সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব। ব্লক গুলি থেকে রিপোর্ট চাওয়া হবে।’ প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাব পড়বে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছিল হাওয়া অফিস। বিশেষকরে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, মানবাজার-১ ও মানবাজার-২ ব্লকে ক্ষতিক্ষতির আশঙ্কা জারি করা হয়েছিল। কৃষকদের আশঙ্কা ছিল, অধিকাংশ জমিতেই এই সবে ধানের শিষ ফুটতে শুরু করেছে। ভারি বৃষ্টি হলেও তেমন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু ঝড়ে যদি ধানগাছ মাটিতে হেলে পড়ে, তাহলে কার্যত সর্বনাশ হয়ে যাবে। সেই আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার রাতের ঘুম উবেছিল চাষিদের।
যদিও সেরকম কোনও ক্ষতিই হয়নি। তবে, যে সমস্ত জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছিল, সেইসব জমির ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। যদিও কৃষি আধিকারিকদের বক্তব্য, সেই সংখ্যাটা ১০ শতাংশও হবে না। বরং ৯০ শতাংশ জমির ধান ভালোই রয়েছে। তাছাড়া রোদ উঠলেই ফের ধান গাছ দাঁড়িয়ে যাবে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, এমনিতেই বাংলা থেকে বর্ষা বিদায় নিয়েছে। এই সময় ধানের শিষ ফুটতে শুরু করেছে। এই সময় জমিতে জলের প্রয়োজন। রুখাশুখা পুরুলিয়ায় ধান চাষের জন্য বৃষ্টির জলই ভরসা চাষিদের। গত দু’বছর অনাবৃষ্টির জন্য ধানচাষ সেভাবে হয়নি পুরুলিয়ায়। গত বছর প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে চাষই হয়নি।