• রানাঘাট নিরাপদই, ক্ষয়ক্ষতি শূন্য
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: দুর্যোগের আগে প্রশাসনিক প্রস্তুতির সুফল। ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হল না নদীয়া জেলার রানাঘাট মহকুমাকে। শুক্রবার জেলাস্তরে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, তাতে কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা মৃত্যুর ঘটনা নেই বলেই জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে, টানা বৃষ্টিতেও গঙ্গার জলস্তর স্বাভাবিক উচ্চতায় বইছে বলেই দেখা গিয়েছে সকাল ৬টার রিডিংয়ে। 

    বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ওড়িশার ধামারাতে ল্যান্ডফল হয়েছে সাইক্লোন ডানার। প্রায় ১২০ কিমি গতিবেগে ঝড় আছড়ে পড়ে উপকূল এলাকাটিতে। তারই প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো উপকূলীয় জেলাগুলিতে। একসঙ্গে লাল সতর্কতা জারি হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার জেলায়। নদীয়া এই তালিকায় না থাকলেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ার কথা ছিল। তাই আগে থেকেই রানাঘাট মহকুমা প্রশাসন, বিভিন্ন পুরসভা, পুলিস, দমকল ও বিদ্যুৎ বিভাগ দফায় দফায় মানুষকে সতর্ক করেছে। বিপদ ঘটতে পারে এমন বিষয়গুলির উপর বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আর তাতেই এসেছে সাফল্য। শুক্রবার সকালে মহকুমার ৩টি পূর্ণাঙ্গ পুরসভা এলাকা অর্থাৎ রানাঘাট শান্তিপুর, বীরনগর এবং দু’টি নোটিফায়েড এলাকা, তাহেরপুর এবং কুপার্স ক্যাম্পে ক্ষয়ক্ষতি কিছুই হয়নি। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি, পশু পাখির ক্ষয়ক্ষতি, মানুষের মৃত্যু, গাছ পড়ার মত কোনও ঘটনাই নথিভুক্ত হয়নি। ফলে সমস্ত রিপোর্ট এককথায় ‘নিল’ লেখা হয়েছে। কেবল ফসলের ক্ষয়ক্ষতি এদিন বিকেল পর্যন্ত পরিমাপ করা যায়নি। যেহেতু দুর্যোগের উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েনি, তাই মানুষ অথবা পশুপাখির জন্য ক্যাম্প খোলার দরকারও পড়েনি। ত্রিপল অথবা শুকনো খাবারের চাহিদাও ছিল না পুরসভাগুলির তরফে। কয়েকটি জায়গা থেকে ত্রিপল চাওয়া হলেও উপযুক্ত ক্ষয়ক্ষতি দেখালে তবেই ত্রিপল মিলবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় মহকুমা অফিসের তরফে। এর ফলে আর সেই ‘দাবি’ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। 

    এদিকে, বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রের খবর, দু’টি সাধারণ পোলের ক্ষতি ছাড়া আর তেমন কিছুই নথিভুক্ত হয়নি। তাদের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গ্রাহকদের উল্লেখযোগ্য কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। পাশাপাশি টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েনি গঙ্গাতেও। শুক্রবার সকাল ৬টায় নেওয়া স্বরূপগঞ্জের রিডিং বলছে, ভাগীরথীর জলস্তর ছিল, ৬.২১ মিটার। সরকারি হিসেবে, জলস্তর কমেছে বলেই সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই লাগাতার বৃষ্টিতে রানাঘাটজুড়ে কার্যত বন্ধের চেহারা ছিল শুক্রবার সারাদিন।
  • Link to this news (বর্তমান)