সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: রাত জাগলেন অনেকেই। কেউ আতঙ্কে, কেউ দুর্যোগের আভাস পেতে। ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় রাত জাগল প্রশাসন। সঙ্গে বহু মানুষ শহর থেকে গ্রামে রাত জাগলেন। গ্রামীণ হাওড়া জুড়ে চিত্রটা একই। কেউ রাত জেগেছে ঝড় বৃষ্টির হাত থেকে নিজের বাড়ি ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে। আবার কেউ রাত জেগেছেন, নিজের উপার্জনে সাহায্য করা বাহনকে রক্ষা করতে। জনপ্রতিনিধি থেকে প্রশাসনিক কর্তারা রাত জেগেছেন এলাকার মানুষের কথা ভেবে। আশঙ্কায় ছিলেন সাধারণ মানুষও। শ্যামপুরের গাদিয়াড়ার পাঁচসেরা পাড়ার বাসিন্দা ইট ভাটার শ্রমিক শেখ হালিম আলি। রূপনারায়ণ নদীর তীরে ছোট টালির চাল ও ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া বাড়িতে স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। উম-পুন, যশের মতো ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। আর সেই কারণে বৃহস্পতিবার ‘ডানা’ র আতঙ্কে রাত জাগতে হয়েছে তাঁকে। হালিম আলি জানান, এর আগে ঘূর্ণিঝড়ে ঘরের এক দিকের চাল উড়ে গিয়েছিল। সারারাত ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির সকলকে নিয়ে ঘরের এককোণে রাত কাটাতে হয়েছিল। সেই কারণে এবারেও আতঙ্কে রাত জেগেছিলাম। তবে ভাগ্য ভালো এবারে তেমন কিছু হয়নি। অন্যদিকে, শ্যামপুরের ডিহিমণ্ডলঘাটের বাসিন্দা ভোলানাথ মাখাল নদীর পাড়ে নিজের মাছ ধরা নৌকা বেঁধে রেখে এসেও বাড়িতে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেননি। ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে দুই সঙ্গীকে নিয়ে নৌকায় রাত জাগছিলেন। যদিও মাঝরাতে দমকা হাওয়ায় নৌকায় জল ঢুকে যাওয়ায় কোনওরকমে পাড়ে উঠে পড়েছিলেন। আর তারপর সারারাত জেগে বসে ছিলেন তিনি। ভোলানাথ বাবু জানান, ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা আছে। সেই কারণে বৃহস্পতিবার রাত জেগেছিলাম। কিন্তু নৌকার যা ক্ষতি হল কীভাবে সামাল দেব সেটা ভাবতে পারছি না। অন্যদিকে, এদিন উলুবেড়িয়া মহকুমা শাসকের দপ্তর থেকে বিভিন্ন ব্লক অফিস, এমনকী উলুবেড়িয়া পুরসভাতেও রাত জেগেছেন চেয়ারম্যান থেকে আধিকারিকরা। রাজ্যের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরাও তাঁর মতোই যে যার এলাকার রাত জেগে মানুষের পাশে থেকেছি।