মাত্র দু’বছরেই মিলেবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের সুবিধা, মমতার ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত এলাকার মানুষ
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, কলকাতা ও ঘাটাল: আগামী দু’বছরের মধ্যেই শেষ করতে হবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ। শুক্রবার, রাজ্য সেচদপ্তরকে এই সময়সীমা বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতে উচ্ছ্বসিত ঘাটালের মানুষ। তাঁরা জানান, কোনোভাবে আর দু’টো বছর কাটাতে পারলেই আর বর্ষার সময় দুশ্চিন্তায় কাটাতে হবে না তাঁদের।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, এই খবর শুনে আমাদের খুবই ভালো লাগছে। আমরাও চাই, কাজটি খুব তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হোক। তবে আমাদের দাবি, মাস্টার প্ল্যানের সমস্ত কাজই যেন ঠিকমতো রূপায়িত হয়।
তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুদাইত বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সারা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম। তিনি কথা দিয়ে রাখেন। মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের কথা দিয়েছিলেন তিনি লোকসভা ভোটের আগেই, সেটাকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুললেন। এবার ঘাটালের মানুষের জল-যন্ত্রণা দূর হবেই।
তবে বিজেপি নেতা তথা ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষই করেছেন, মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের ইচ্ছে থাকলে ২০১১ সাল থেকে এত বছর চুপ ছিলেন কেন মুখ্যমন্ত্রী? আসলে ইস্যুটাকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়াই তাঁর কৌশল।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বর্ষায় দুই মেদিনীপুরের ১৩টি ব্লকের ১৬৫০ বর্গ কিমি এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয় এবং গবাদিপশু মারা যায়। ইস্যুটি স্থানীয় এমপি দীপক অধিকারী (দেব) সংসদে বহুবার উত্থাপন করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাতে কোনও গুরুত্বই দেয়নি। তাতে অত্যন্ত বিরক্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১২ ফেব্রুয়ারি হুগলির এক সভা থেকে, দেবকে সামনে রেখে রাজ্যের উদ্যোগেই মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের কথা ঘোষণা করেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘাটালে বন্যা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রতিশ্রুতির কথা সেদিন তাঁর মুখে ফের শুনে সাধারণ মানুষ অত্যন্ত আশ্বস্ত হন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন একই কথা আবার বলেছেন কলকাতায়। তাই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ নিয়ে ঘাটালবাসীর যাবতীয় সংশয়ই দূর হল। অন্যদিকে, পাইপ পাতা সত্ত্বেও বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ না পৌঁছনোয় উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজটি শেষ না-হলে এই প্রকল্পের জন্য আর জমি দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি সেচদপ্তরকে।