• ‘ঝড়ে কি গাছ থেকে আম পড়বে?’ আতঙ্কের মধ্যে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে মস্করা করে ফোন, তিতিবিরক্ত আধিকারিকরা
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় ডানা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। চালু করা হয়েছে ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার। পাশাপাশি দুর্গতদের সাহায্য করতে নবান্নে বিশেষ কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। যেখানে ফোন করে সরকারের সহযোগিতাও পান বহু মানুষ। কিন্তু তারই মাঝে ব্যস্ত কন্ট্রোল রুমে আধিকারিকদের তিতিবিরক্ত করে দেওয়ার মতো একের পর এক ফোন। রাত প্রায় পৌনে ১২টা। সবে শুরু হয়ে গিয়েছে ডানা’র ল্যান্ডফল। তখনই বেজে উঠল কন্ট্রোল রুমের একটি ল্যান্ডলাইন। ফোন ধরলেন এক কর্মী। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি ভারী গলায় প্রশ্ন করলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ডানা কতটা শক্তিশালী?’ এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হল তাঁকে। সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় প্রশ্ন, ‘এই গতিবেগের ঝড়ে কি গাছ থেকে আম পড়ে?’ প্রশ্ন শুনে কন্ট্রোল রুমের আধিকারিক বুঝে গিয়েছেন যে, ওই ব্যক্তি বিপদে পড়েননি। মস্করা করতে ফোন করেছেন। কাজের জরুরি সময় মজা করার এই ফোন পেয়ে বিরক্ত হলেন আধিকারিক। কিন্তু ফোন কেটে দেওয়ার অনুমতি নেই। ‘এমন কঠিন সময় এই ধরনের ফোন এলে সত্যিই যাঁরা সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা যোগাযোগ করতে পারবেন না’, সে কথা জানানো হল ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিকে। তবুও ফোন না কেটে প্রশ্ন করতে থাকেন। পরবর্তী প্রশ্ন, ‘এটা তো আম ফলার সময় নয়। রাজ্যে এমন কী কোনও বাগান আছে যেখানে গেলে আম কুড়নো যাবে?’ এই প্রশ্নটি করে বেদম হাসতে হাসতে ফোন কেটে দেন তিনি। হাফ ছেড়ে বাঁচেন কন্ট্রোল রুমের আধিকারিক।

    এখানেই শেষ নয়। আরও বেশ কিছু এমন ফোন এসেছে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে। পশ্চিমাঞ্চলের এক জেলা থেকে একটি ফোন আসে। ওই ব্যক্তির আবদারটি অদ্ভুত। তিনি ঝড়ে মধ্যে মাছ ধরতে যেতে চান। তাই তাঁকে জানাতে হবে যে, বাড়ির আশপাশে পরবর্তী দু’ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা আছে কি না। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময়ই বৃষ্টি আসতে পারে বলে তাঁকে জানানো হয়। কিন্তু ফোন ছাড়তে নারাজ ছিলেন তিনি। উল্টে পরবর্তী প্রশ্ন, ‘আচ্ছা এই ঝড়ে কী পুকুরের সব মাছ ডাঙায় উঠে যাবে?’ এই প্রশ্নের না দেওয়াতে তিনি নিজেই ফোনের লাইন কেটে দেন। সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘এক সঙ্গে কুড়িটিরও বেশি লাইনে মানুষ ফোন করছিলেন। প্রতিটি প্রশ্নের সমান গুরুত্বের সঙ্গে উত্তর দেওয়া হয়েছে। শতাধিক মানুষকে সাহায্য করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনে মজা করার জন্য ফোন করলে দুর্গতরা সুরাহা চাওয়ার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। সচেতন নাগরিকদের এই বিষয়টি বোঝা উচিত।
  • Link to this news (বর্তমান)