দু’মাস জলমগ্ন গাইঘাটা ব্লকের রাস্তায় বাসের সঙ্গেই চলছে নৌকা, ত্রাণ শিবিরেই বহু মানুষ
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, বনগাঁ: জল যন্ত্রণা পিছু ছাড়ছে না গাইঘাটা, বনগাঁ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। প্রায় দু’মাস ধরে জলবন্দি তাঁরা। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। এমনকি দুর্গাপুজোর সময়ও বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়েছেন তাঁরা। এখন অল্প অল্প করে জল নামতে শুরু করেছে। তারই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় চলে আসায় ফের বৃষ্টি। আবার কপালে চিন্তার ভাঁজ জলবন্দি মানুষগুলির। দুর্গাপুজোয় হয়নি এবার কালীপুজোতে ফেরা যাবে না নিজের বাড়ি। সবমিলিয়ে চরম সমস্যায় তাঁরা। এর পাশাপাশি জলের তলায় চলে গিয়েছে চাষের জমি। ফলে একপ্রকার কর্মহীন হয়েই দিন কাটছে কৃষকদের। আধবেলা বা একবেলা খেয়ে কাটাচ্ছেন কোনওরকমে। বনগাঁ মহকুমায় সবথেকে খারাপ অবস্থা গাইঘাটা ব্লকের। এখানকার প্রায় ছ’টি পঞ্চায়েত এলাকা জলমগ্ন। হাজার হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরের আশ্রয়ে। রাস্তাঘাটও জলে ডুবে। জলের মধ্য দিয়ে কোনওরকমে চলছে বাস। নৌকাও চলছে। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে মানুষ।
গাইঘাটা ব্লকের শসাডাঙা, ঝাউডাঙা, সুটিয়া, সিঙেরডাঙা, মানিকহীরা, আংড়াইল প্রভৃতি এলাকা দীর্ঘদিন ধরে জলমগ্ন। সিঙেরডাঙা গ্রামের বাসিন্দা মনোরঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রায় দেড় মাস ধরে বাড়িতে হাঁটু সমান জল জমে রয়েছে। স্থানীয় একটি ক্লাবে আশ্রয় নিয়েছি। পঞ্চায়েত একটা ত্রিপল দিয়েই দায় সেরেছে। কাজ না থাকায় প্রায় না খেয়ে দিন কাটছে।’ বাড়ি থেকে কবে জমা জল সরবে জানেন না এখানকার বাসিন্দারা। রামনগর পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দা বলেন, ‘পুজোর আগে থেকে বাড়িতে জল। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছি। জল কিছুটা কমতে শুরু করেছিল। এরই মধ্যে নতুন করে বৃষ্টিতে বাড়ি ফেরা ফের অনিশ্চিত হয়ে গেল। মাঠঘাট, রাস্তা সব জলের তলায়।’ বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘রাস্তায় জল জমে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বাস বা অন্যান্য যানবাহন। একই রাস্তায় চলছে নৌকা। ঝাউডাঙা-বনগাঁ সড়কের পাবনাপাড়ায় রাস্তায় জল থাকায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে।’ বনগাঁ পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড এখনও জলমগ্ন। ঢাকাপাড়া, নয়াগোপালগঞ্জ সহ বেশ কিছু এলাকায় জল জমে থাকায় প্রবল সমস্যায় বাসিন্দারা। জল সামান্য কমছিল। কিন্তু নতুন করে বৃষ্টিতে আবারও জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কায় ফের আতঙ্ক বাসিন্দাদের।