• কাকদ্বীপ থেকে ক্যানিং, ঝড়ের তেমন প্রভাব না থাকায় স্বস্তিতে সুন্দরবনবাসী
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: যতটা ভাবা হয়েছিল, ততটা হয়নি। ফলে বড় বিপর্যয়ের থেকে রেহাই পেলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাধারণ মানুষ। ঘূর্ণিঝড় ডানার আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তি পেল সাগর থেকে সুন্দরবন। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গঙ্গাসাগরে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হলেও শুক্রবার তা বাড়তি গতি পেয়েছিল। এর জেরে সাগরের বেশ কিছু নিচু জমিতে জল দাঁড়িয়ে যায়। সকালের দিকে কপিলমুনির মন্দিরের সামনে এবং সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার তিন ও চার নম্বর রাস্তা সংলগ্ন মেলার মাঠ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এখবর পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দির ঠিক আছে কি না, জানতে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার কাছে খোঁজ নেন তিনি। কোনও ক্ষতি হয়নি বলে তাঁকে আশ্বাস দেন মন্ত্রী।

    এদিন সকাল থেকে কাকদ্বীপ ও ক্যানিং মহকুমা সহ বিভিন্ন এলাকা ছিল জনশূন্য। ইতিউতি দু’-একটি দোকান খোলা থাকলেও সিংহভাগই ছিল বন্ধ। সাগরে কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কুলতলির দুই জায়গায় বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। জালাবেড়িয়া ২ নম্বর অঞ্চলে বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে এক শিশু সহ জখম হয়েছেন পাঁচজন। সবাইকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, মেরিগঞ্জ ১ নম্বর অঞ্চলের পশ্চিম খালপাড়ে মিসবাউদ্দিন মোল্লা নামে এক বাসিন্দার ঘরের একাংশ ভেঙে যায়। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, আগে যে সব ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তার তুলনায় এবারের ধাক্কা অনেকটাই কম। এর ফলে রক্ষা পেয়েছে উপকূলের এলাকা। যতটুকু ক্ষতি হয়েছে, তা মূলত সাগরেই। মন্ত্রী বলেন,  ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় দু’হাজার বাড়ি, ৩০ শতাংশ পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অল্প সংখ্যক গাছ ভেঙে পড়েছে। সাগরদ্বীপ সহ বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধ রক্ষা পাওয়ায় জমিতে নোনা জল ঢুকতে পারেনি। পাথরপ্রতিমা, গোসাবা সহ বেশ কিছু জায়গায় নদী বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। সেচদপ্তরের কর্মী-আধিকারিকরা তড়িঘড়ি তা মেরামত করতে নেমে পড়েন।

    সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় জল সেভাবে না জমলেও জেলার শহরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রায় জলের তলায় চলে গিয়েছে। বারুইপুর, মহেশতলা, রাজপুর সোনারপুর পুরসভায় পাম্প বসিয়ে জল নামানোর ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি কাকদ্বীপ হাসপাতালে ঢোকার মুখে জল থইথই অবস্থা। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে বহু জায়গায় শিস সহ ধান গাছ মাঠেই শুয়ে পড়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর চাষের জমি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)