• ১২০০ হেক্টর জমির সব্জি নষ্টের আশঙ্কা, জমা জলে জেরবার বাসিন্দারা
    বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র ঝাপটায় হুগলি জেলাজুড়ে প্রায় ১২০০ হেক্টর জমির সব্জি ও বীজতলার ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মূলত, জল জমে যাওয়ার কারণেই সব্জি চাষে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে, এমনটাই মনে করছেন কৃষকরা। শুক্রবার ব্যাপক ঝড়ের তাণ্ডব না থাকলেও দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। কখনও তীব্র, কখনও ধীরগতিতে বৃষ্টি সারাদিন। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও সূর্যের মুখ দেখেনি কেউ। সপসপে ভিজে আবহাওয়ার কারণেই সব্জিচাষ প্রভাবিত হওয়ার আতঙ্ক বেড়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত সরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব তৈরি হয়নি। পাশাপাশি, ধানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও তীব্র হয়ে উঠেছে। এদিকে, জেলার বিভিন্ন জায়গায় জমা জলে জেরবার হয়েছেন বাসিন্দারা।

    জেলা উদ্যানপালন কর্তাদের দাবি, ‘ডানা’ আসার ইঙ্গিত ছিলই। সেকারণে কৃষকদের যেমন বিমার আওতায় আনা হয়েছে, তেমনই মিনিকিট দেওয়া হয়েছে। জেলার উদ্যানপালন বিভাগের আধিকারিক শুভদীপ নাথ বলেন, সব্জি ও বীজতলা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার হিসেব করার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই ২,৮৫০টি মিনিকিট প্যাক বিলি করেছি। তাতে টম্যাটো, বাঁধাকপি, লাউ ও কুমড়োর উন্নতমানের হাইব্রিড বীজ দেওয়া হয়েছে। ঝড়ের আগে পরিস্থিতি অনুসারে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ নিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে বলেন, মাঠের ধান সব তোলা যায়নি। ধান প্রায় পেকে আসার সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সমস্যা হবে, সেটাই স্বাভাবিক। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের হিসেব অনুসারে হুগলি জেলায় গড়ে ১২০০ হেক্টর জমিতে বীজতলা সহ সব্জি চাষ হয়। এবার বন্যা পরিস্থিতির কারণে অনেক জায়গায় বীজতলায় চারা রয়ে গিয়েছে। ফলে সেখানে বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলেও প্রায় ৭২ ঘণ্টার ভিজে আবহাওয়া সব্জির ফলন্ত গাছ ও বীজের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। ছত্রাক আক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এই দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা কপালে ভাঁজ ফেলেছে চাষিদের। উদ্বেগ বাড়িয়েছে উদ্যানপালন কর্তাদেরও। সঙ্গে পেকে আসা ধানের ক্ষেত্রে তিনদিনের বৃষ্টি ও ঝড় কেমন প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এদিকে, তীব্র না হলেও শুক্রবার দিনভর নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবারে রাতে বৃষ্টির দাপট বাড়লেও শুক্রবার কিছুটা কম ছিল। দিনের বিভিন্ন সময় ঝোড়ো হাওয়া দেখা গিয়েছে। জেলার গ্রাম থেকে শহর নিচু এলাকায় জল জমে গিয়েছে। হুগলির ব্যান্ডেল, শ্রীরামপুর সহ একাধিক জায়গায় রেলের সাবওয়েতে জল জমেছে। ডানকুনির মতো একাধিক পুরসভার বসতি এলাকায় জল জমে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গায় জলস্তর কিছুটা বেড়েছে। প্রশাসনের দাবি, ঝড়ের দাপট তেমন না থাকায় তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)