এই সময়: ১৭৫ মিটার দীর্ঘ প্ল্যাটফর্মে ৩১টি গার্ডরেল। আর দু’টি গার্ডরেলের মধ্যে ৫.৭ মিটার বা প্রায় ১৮.৪ ফুটের ব্যবধান। মেট্রোর ট্র্যাকে লাফিয়ে যাত্রীদের আত্মহত্যার চেষ্টা রুখতে এমনই ‘নিশ্ছিদ্র’ ব্যবস্থা কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের। সম্প্রতি চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এক মহিলা যাত্রী তাঁর পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে ওই স্টেশনে ট্রেন থেকে নামেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মেয়েকে প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করিয়ে রেখে একটি রেকের সামনে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার ভয়াবহতায় চমকে ওঠেন অনেকেই। এরপর নতুন করে আলোচনা শুরু হয় মেট্রোর ট্র্যাকে আত্মহত্যা আটকানোর সম্ভাব্য পদ্ধতি নিয়ে।তারই পরিণতি কালীঘাট স্টেশনে মেট্রোর এমন ‘পরীক্ষামূলক’ উদ্যোগ। ১৯৮৪ সালে কলকাতা মেট্রোয় বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রী পরিবহণের পর থেকে এ পর্যন্ত মেট্রোর ট্র্যাকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছে ৩৫০-এর বেশি বার। এর মধ্যে ১৭৩ জনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কলকাতা মেট্রোর নর্থ-সাউথ করিডর বা ব্লু-লাইনে আত্মহত্যা আটকানোর কোনও ব্যবস্থাই নেই। পরবর্তীকালে কলকাতায় মেট্রোর যে লাইন তৈরি হয়েছে তাতে অবশ্য প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর রয়েছে। ব্লু-লাইন সবচেয়ে পুরোনো হওয়ার জন্য সেখানে এমন ব্যবস্থা করার উপায় নেই।
সেই খামতি দূর করতেই চার ফুট উঁচু গার্ডরেল ব্যবহার করার পরিকল্পনা মেট্রোর কর্তাদের। আপাতত কালীঘাট স্টেশনের ডাউন প্ল্যাটফর্মে মাত্র সাতটি এমন গার্ডরেল বসেছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্লু-লাইনের প্রতি স্টেশনেই এমন গার্ডরেল বসবে। তবে যাত্রীদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে মেট্রো চত্বরে বা অন্যত্র আত্মহত্যা না করার জন্য।
১৭৫ মিটার দীর্ঘ প্ল্যাটফর্মে মাত্র ৩১টি গার্ডরেল বসিয়ে আত্মহত্যা প্রতিরোধের এমন প্রয়াস — বিশেষ করে দু’টি গার্ডরেলের মধ্যে বিশাল ব্যবধান মেট্রোর যাত্রীদের বিষ্ময় বাড়িয়েছে। যাত্রীদের একাংশ বিরক্তির সঙ্গে জানিয়েছেন, ভিড় প্ল্যাটফর্মে এমন গার্ডরেল ট্রেনে সহজে ওঠা-নামার পথে বড় বাধার কারণ হতে চলেছে। এ ভাবে কিছুদূর পর পর গার্ডরেল বসিয়ে ‘কাজের কাজ’ কিছুই হবে না বলে মনে করছেন যাত্রীদের একাংশ।