বহু ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে এই মন্দিরের সঙ্গে। আজও এই মন্দির চত্বরে ভক্তদের আনাগোনা প্রতিদিনই লেগে রয়েছে। এখনও মন্দির চত্বরে প্রবেশ করলে গা ছমছম করে। জলপাইগুড়ি গোশালা মোড়-সংলগ্ন এলাকায় স্থিত এই মন্দিরে সারা বছর ভক্তদের আনাগোনা চোখে পড়লেও কালী পুজোর রাতে ভক্তদের যেন ঢল নামে মন্দির জুড়ে।
কালী পুজোর আর মাত্র ক'দিন বাকি। কোন সময় এই মন্দিরে পুজো হবে? পুরোহিতের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, কালী পুজোর দিন রাত ৯ টা থেকে শুরু হয়ে সারারাতই চলবে এই পুজো। এই মন্দিরে মা শ্মশানকালী রূপে বিরাজমান। তিনি খুবই জাগ্রত! প্রতি বছরের মতো এ বছরও পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি জড়িত এই মন্দিরের সঙ্গে। 'দেবী চৌধুরানী' নামে তাঁর এক বিখ্যাত উপন্যাস আছে। ঐতিহাসিক দিক থেকে এই মন্দিরের গুরুত্বের কথা ভেবেও বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীরা এখানে কালীপুজো রাতে পুজো দিতে আসেন। বহু মানুষ মনে করেন, এই মন্দিরে পূজা দিলে তাঁদের মনস্কামনা পূরণ হবে।
এমনিতেও সারা বছর ধরেই দূর দূরান্ত থেকে বহু দর্শনার্থী এবং বহু পর্যটক জলপাইগুড়ি গোশালা মোড়ের এই দেবী চৌধুরানী শ্মশানকালী মন্দিরে আসেন। পুজোর রাতে মাকে এখানে আমিষ ভোগ দেওয়া হয়ে। তাতে থাকে বোয়াল মাছ এবং শোল মাছ। সঙ্গে রীতি অনুযায়ী মাকে সুরা বা মদ দেওয়া হয়। কালীপূজা উপলক্ষে পুজোর রাতে আজও বলিপ্রথা রয়েছে। ছাগল বলি দেওয়া হয়। এই পুজোর রাতে এই মন্দিরের চারদিকে ছায়াবৃক্ষ করে রেখেছে বিশাল বটগাছ। মন্দিরের চারপাশে রুদ্রাক্ষ গাছও একই ভাবে রয়েছে প্রায় আড়াইশো বছর ধরে। কষ্টিপাথরের মূর্তিতে পুজোর দিন ১৫১ টি মালসায় ভোগ দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে পুজো দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল নামে।
ভক্তদের বিশ্বাস, মায়ের কাছে মনস্কামনা করলে তা মা পূরণ করেন। আর সেই টানে প্রত্যেক বছর কালীপুজোর দিনে দেবী চৌধুরানী মন্দিরে এসে ভিড় জমান ভক্তরা। কালী পূজা উপলক্ষে ইতিমধ্যেই মন্দির-চত্বরে সাজো-সাজো রব। চলছে রং এর কাজ। এবছরও মাকে পুজো দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন ভক্তগণ।