বাংলার দুঃখ দামোদর হলেও উত্তরবঙ্গের দুঃখ বোধহয় তিস্তা! তিস্তার ওপর যেমন নির্ভর করে উত্তরবঙ্গের কিছু অংশ মানুষের জীবন জীবিকা ঠিক তেমনি আবার কিছু অংশ মানুষের মাথার ছাদও কেড়ে নেয় এই তিস্তাই। বঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করার পর থেকেই নাগারে বৃষ্টির জেরে এবং সিকিমের ভয়াবহ বন্যার ফলে তিস্তার জল বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার ভয়াবহ রূপ যে কি রকম তা রাজ্যবাসীর অজানা নয়। এবার তিস্তার এই ভাঙনের জেরে কার্যত ধংসের মুখে পড়তে চলেছে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের চমকডাঙ্গি এবং লালটং বস্তির এই দুই গ্রাম। ইতিমধ্যে ভাঙন ক্রমশ বেড়েই চলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এরপর তিস্তার জলস্ফীতি হলে কিংবা বন্যা পরিস্থিতি হলে ছবির মত সুন্দর সাজানো গ্রাম দুটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।
বতর্মানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বক্ষণ কড়া নজর রাখা হয়েছে পরিস্থিতির উপর। পুজোর সময় রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকদের সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন জলপাইগুড়ি মহুকমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী ও শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব এবং রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাপতির কৃষ্ণা রায় বর্মন-সহ অন্যান্য আধিকারিক, কর্মীরা। সম্প্রতি আধিকারিকদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জলপাইগুড়ির মহুকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রাম দুটোকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রামের মানুষদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে লালটং গ্রামের প্রায় ৩৭ টি পরিবার এবং চমকডাঙিতে প্রায় ৮২ টি পরিবারের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। সেই দুশ্চিন্তা কিভাবে কাটাবে প্রশাসন এখন সেটাই দেখার বিষয়!
অপরদিকে মুখ্য বাস্তুকার উত্তর-পূর্ব সেচ এবং জলপথ অধিকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, নদীর চ্যানেল গতি পরিবর্তন হয়ে গেছে। নদী পরিবর্তন হয়ে গেলে তখন পাড় ভাঙ্গে স্ট্রাকচার ভেঙ্গে খসে খসে পড়ে যাচ্ছে ক্ষেত্রে চিন্তা বাড়ে। আমরা নদীর ড্রেজিং এর পরিকল্পনা চলছে। তিস্তার বেড উঁচু হয়ে যাওয়ায় নদীগুলো চলে গেছে কিনারে যেখানে জল যেত না। এর ফলে জেলায় অনেক জায়গায় ড্যামেজ হয়েছে। নদী মাঝখানে থাকার কথা, বন্যা হলে তখন নদী কিনারে যায় এখন নদীটাই কিনারে চলে গেছে মাঝখানটা উঁচু হয়ে গেছে। জোর কদমে কাজ চলছে।