পুরুলিয়ার পাহাড় চূড়ায় সবুজে ঘেরা কালীমন্দির, মায়ের সাধনা করতেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা
প্রতিদিন | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সবুজে ঘেরা পাহাড়। প্রকৃতি যেন সমস্ত শান্তি উজার করে দিয়েছে এখানেই। পাহাড় চূড়ায় রয়েছে কালীমন্দির। ঝালদার জমিদার রায়সাহেব প্রেমচাঁদ এই পুজো শুরু করেন। এই বছরের দীপান্বিতা অমাবস্যার বাকি মাত্র কয়দিন। ধীরে ধীরে সেজে উঠছে মন্দির। মায়ের টানে ১৬০টি সিঁড়ি বেয়ে ১৩০ ফুট উঁচুতে থাকা মন্দিরে ছুটে যান ভক্তরা। হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে গমগম করে শিলফোঁড় পাহাড়।
সালটা ১৯৩৪। ঝালদার তৎকালীন জমিদার প্রেমচাঁদ মোদক রায়কে ‘সাহেব’ উপাধি দিয়েছিল ব্রিটিশরা। এর পরই শ্যামা মায়ের আরাধনার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শিলফোঁড় পাহাড়ের মাথায় তৈরি হয় মন্দির। মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন তিনি। এদিকে ব্রিটিশদের অত্যাচারে পাহাড়ের গুহাতে থাকতেন অগ্নিযুগের বিপ্লবীরা। পুজোতে শামিল হন তাঁরাও। সারাবছরই পুজো হয় সেখানে। সেই রীতি-রেওয়াজে কোনও ছেদ পড়েনি।
জমিদার রায় সাহেবের মন্দির তৈরির সূত্র ধরে পাহাড় ও লাগোয়া এলাকায় বদল আসে। এখনকার শিলফোঁড় পাহাড়ের সঙ্গে সেদিনের ছবির মিল পাওয়াই বেশ শক্ত। তবে পুজোর নিয়মে কোনও বদল হয়নি। কিন্তু জমিদারের পুজোয় লেগেছে সর্বজনীনের ছোঁয়া। সাধারণ বাসিন্দাদের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় থানাও। কালীপুজোয় অন্নকূট হয় ঝালদা থানাতেই। দীপাবলির আালোর রোশনাইয়ে সেজে উঠবে পাহাড়ের উপরের কালীমন্দিরও।
শিলফোঁড় পুজো কমিটির বর্তমান সভাপতি তথা ঝালদার পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল বলেন, “এই পুজো অনেকটাই প্রাচীন। ৬৫ ফুট উঁচুতে পাহাড় চূড়ায় পুজো হয়। মা ভীষণ জাগ্রত। আমরা এবারের পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি।”