রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেতৃত্বে প্রজন্ম বদলের পথে ধাপে ধাপে এগোচ্ছে সিপিএম। পক্ককেশ কমরেডদের ধীরে ধীরে বিদায় জানিয়ে সংগঠনে তরুণদের এগিয়ে আনার মতো একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আগে। এবার এরিয়া কমিটির নেতৃত্বে বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হল আলিমুদ্দিনের তরফে। এনিয়ে ‘নজিরবিহীন’ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে দলের তরফে, তাও আবার দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অনুপস্থিতিতে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য সেই নির্দেশিকায় সই করেছেন। তা জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছে বলেও খবর।
মুজফ্ফর আহমেদ ভবন থেকে প্রকাশিত সেই বিজ্ঞপ্তিতে এরিয়া কমিটি গঠনে তিনদফা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কমিটির সদস্যদের গড় বয়স কমানো, মহিলা প্রতিনিধিদের পর্যাপ্ত জায়গা দেওয়ার মত বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। যাঁরা কমিটির সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন, তাঁদের ব্যালট পেপারে নিজেদের নামের পাশে বয়সও লিখতে হবে। নির্দেশিকায় এরিয়া কমিটি গঠনের প্রাথমিক ছকও করে দেওয়া হয়েছে।
সাধারণত সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৩। তাতে ৪০ শতাংশ অর্থাৎ পাঁচজনের বয়স হতে হবে পঞ্চাশের কম। সেই পাঁচ জনের মধ্যে একজনকে হতে হবে অনূর্ধ্ব ৩১ বছর। একজন হবেন অনূর্ধ্ব ৪০, তিনজনের বয়স থাকবে ৫০-এর কম। দুজন মহিলাকে রাখতে হবে এরিয়া কমিটিতে। এই নির্দেশিকায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন এরিয়া কমিটি গঠনের জন্য যে প্যানেল পেশ হবে, তার পালটায় সম্মেলন থেকে কোনও নাম প্রস্তাব করা হলে যদি ভোটাভুটি করতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রত্যেকের নামের পাশে বয়স উল্লেখ করে দিতে হবে ব্যালটে।
এই নির্দেশিকা মেনে এরিয়া কমিটি গঠন করতে হলে এই মুহূর্তে সংগঠনে থাকা অনেকেই বাদ পড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের স্রেফ কর্মী হিসেবেই থাকতে হবে। এনিয়ে দলের অন্দরেও দ্বিমত তৈরি হচ্ছে। অনেকের মত, সঠিক পথেই সংগঠনে সংস্কার হচ্ছে। খোলনলচে বদলে চাঙ্গা হতে হবে দলকে। কারও আবার অভিযোগ, এই নির্দেশিকা খুবই যান্ত্রিক। এছাড়া তরুণ প্রজন্মকে তুলে আনতে গিয়ে অনভিজ্ঞতা যেন ‘বোঝা’ নাহয়, সেই আশঙ্কাও রয়েছে।