প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রীকে দিয়ে জুতো পরিষ্কার করিয়ে বিতর্ক তৈরি করলেন শিক্ষিকা। এই অভিযোগ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে উঠতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায় লস্করপুরের প্রাথমিক স্কুলে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসতেই আজ, শনিবার লস্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেরাও করেন অভিভাবকরা। স্কুলের মধ্যে শিক্ষিকার এই ঘটনা ঘটানোকে চেপে যেতে চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীকে ভয় পর্যন্ত দেখানো হয়েছিল। যাতে সে মুখ না খোলে। কিন্তু অবশেষে সেই ছাত্রী মুখ খুলে ফেলে অভিভাবকের সামনে। তার জেরেই ক্ষোভ ফেটে পড়লেন অভিভাবকরা।
কেন এমন কাজ করা হল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে দিয়ে জুতো পরিষ্কার করানোর ঘটনার কথা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিদ্যালয় পরিদর্শক করণের প্রতিনিধি, পুলিশ এবং পঞ্চায়েত সদস্য। কারণ অভিভাবকরা ঘেরাও করে ফেলেছিলেন। জবাব চাইছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। ওই ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেটার দাবি তুলে সুব্যবস্থার আবেদন করে বিক্ষোভকারী অভিভাবকরা। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে পড়ে যে ঘটনাটি নিয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন অফিসাররা।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? শুক্রবার লস্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার জুতায় চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীর জুতোর নোংরা লেগে যায়। স্কুলে আসার পথে ওই চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর জুতোয় নোংরা লেগে যায়। সেই নোংরা ঘটনাক্রমে স্কুল শিক্ষিকার জুতায় লেগে যায়। তাও ইচ্ছা করে ছাত্রীটি লাগায়নি। কিন্তু এটা দেখেই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই শিক্ষিকা। তখন ওই শিক্ষিকা তার জুতো ধুয়ে দেবার জন্য চাপ দেয় বলে অভিযোগ। আর এভাবেই ওই ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষিকা জুতো পরিষ্কার করিয়ে নেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনা যাতে সে কাউকে না বলে তার জন্য ছাত্রীকে শাসানো পর্যন্ত হয় বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু পরদিন স্কুলে আসতে না চাওয়ায় এবং ভয় পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা ছাত্রীকে সব বলতে সাহস জোগায়। তখনই এই ঘটনা সামনে আসে।
আর কী জানা যাচ্ছে? জুতো পরিস্কার করার ঘটনা শুনে আজ, শনিবার স্কুল শুরু হতেই অভিভাবকরা সেখানে হাজির হন। আর ওই স্কুল ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তখন ওই শিক্ষিকার সঙ্গে তুমুল অশান্তি শুরু হয় অভিভাবকদের। উত্তপ্ত পরিস্থিতির খবর পেয়ে স্কুলে পৌঁছয় হিলি থানার পুলিশ এবং হিলি স্কুল পরিদর্শকের প্রতিনিধিরা। তাঁরা আশ্বাস দেন, গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে আর এমন ঘটনা ঘটবে না। তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হয়। অভিভাবকরা স্কুলের সুব্যবস্থার দাবি তুলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। চাপে পড়ে যান ওই শিক্ষিকা।