• তিস্তার ভয়াল গ্রাসে জলপাইগুড়ির একের পর এক গ্রাম, পরিদর্শনে ছুটলেন মেয়র
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ঘূর্ণিঝড় ‘‌দানা’‌ এখন বাংলা থেকে চলে গিয়েছে। অনেক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও সেটা বড় আকার নেয়নি। যা ঘটেছে সব ওড়িশায়। কিন্তু বাংলা এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পেয়েছে। আর তাতেই নাগাড়ে বৃষ্টি থেকে শুরু করে গ্রামবাংলায় বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার দেখা যাচ্ছে, তিস্তার ভয়াল গ্রাসে গ্রামের অস্তিত্ব সংকট তৈরি হয়েছে। তিস্তা নদীর ভাঙনের জেরে ধংসের মুখে পড়েছে জলপাইগুড়ির দুটি গ্রাম। আর বেশ কয়েকটি গ্রাম আতঙ্কে ভুগছে। পরিবারগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের।

    উত্তরবঙ্গের এই তিস্তা নদী আগেও বহুবার বড় বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে গ্রামবাসী থেকে পর্যটকদের। এই তিস্তা নদীর উপর নির্ভর করে উত্তরবঙ্গের একাংশ মানুষের জীবন–জীবিকা। তবে এই নদীরই ভয়াল গ্রাসে মানুষের মাথার ছাদ পর্যন্ত কেড়ে নেয়। বর্ষায় নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে এবং সিকিমের ভয়াবহ বন‍্যায় তিস্তার জল বেড়ে গিয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। এবার তিস্তা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। তার জেরে ধংসের মুখে পড়তে চলেছে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের চমকডাঙ্গি এবং লালটং বস্তির দুই গ্রাম। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হলে সাজানো গ্রাম দুটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    এই পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন। রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং স্থানীয় প্রশাসনের অফিসরাররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এমনকী জলপাইগুড়ির মহকমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী এবং শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব সঙ্গে রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাপতির কৃষ্ণা রায় বর্মণ সকলেই ভয়াল রূপ দেখে এসেছেন। জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‌প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই গ্রাম দুটোকে রক্ষা করতে হবে। গ্রামের মানুষজনকে আগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে তারপর পরিকল্পনা ছকা হবে। লালটং গ্রামের প্রায় ৩৭টি পরিবার এবং চমকডাঙিতে প্রায় ৮২টি পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে ভুগছেন।

    এই আতঙ্ক প্রশাসনকেই কাটাতে হবে। এমন ঘটনা যে ঘটবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। কিন্তু বারবার তিস্তার উপর চাপ পড়েছে। সহ্য করতে হয়েছে একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আর আজ সেসব সহ্য করেই দুর্বল হয়ে পড়েছে তিস্তার নদীবাঁধ। এই বিষয়ে মুখ্য বাস্তুকার উত্তর–পূর্ব সেচ এবং জলপথ অধিকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিকের বক্তব্য, ‘‌নদীর চ্যানেলে গতি পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তন হলে তখনই পাড় ভাঙে, স্ট্রাকচার ভেঙে পড়ে। এই নদীর ড্রেজিং করার পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে জেলার অনেক জায়গায় ড্যামেজ হয়েছে। নদী মাঝখানে থাকার কথা। সেখানে বন্যা হলে তখন নদী কিনারে যায়। এখন নদীটাই কিনারে চলে গিয়েছে। মাঝখানটা উঁচু হওয়ায় কাজ চলছে।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)