• তিন ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা সংগঠনের নেতার সঙ্গে সন্দীপের ছবি প্রকাশ্যে, গণকনভেনশন ‘থ্রেটময়’
    আনন্দবাজার | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন অনিকেতরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘রাজ্য প্রশাসন থ্রেট কালচারকে দুঃখজনক বললেও তারা একটা পক্ষ নিতে চাইছে।’’ দেবাশিস আবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বৈঠক করে মনে হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী একটা পক্ষ নিয়েছেন।’’ কিঞ্জল আবার সরাসরি গণকনভেশনে আগতদের উদ্দেশে পক্ষ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘এ বার সময় এসেছে পক্ষ নেওয়ার। থ্রেট কালচারে অভিযুক্তদের গঠিত অ্যাসোসিয়েশনের দিকে না কি অন্য পক্ষে।’’

    প্রসঙ্গত, ‘থ্রেট কালচার’-এর অভিযোগে আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৫১ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেছিলেন। তা নিয়ে গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে নবান্ন-বৈঠকে। পরের দিন কলকাতা হাই কোর্ট আরজি করের ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয়। নতুন সংগঠনে দেখা গেল সেই ৫১ জনের অনেকেই রয়েছেন। ওই সংগঠন নিয়ে যেমন জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্ট প্রশ্ন তুলছে, তেমনই তাদের সংগঠন নিয়েও পাল্টা প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে শাসকদল তৃণমূলের একাংশকে। সম্প্রতি তারা দাবি করেছে, ২০২১ সালে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী আবাসনে মধুমিতা ঘোষ নামের এক মেডিক্যাল পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনায় মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেছিলেন যাঁর বিরুদ্ধে, সেই শাহবাজ শেখ বর্তমান আন্দোলনের সামনের সারিতেই রয়েছেন। যদিও এ প্রসঙ্গে জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্ট-এর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

    ‘থ্রেট কালচার’ ছাড়াও আরজি করের নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিও উঠল গণকনভেশনে। আরজি কর মামলায় সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিট নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করলেন অনিকেতরা। তাঁদের দাবি, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর কলকাতা পুলিশ যা বলেছিল, তার সঙ্গে সিবিআইয়ের চার্জশিটের কোনও পার্থক্য নেই। আরজি করেরই জুনিয়র ডাক্তার অনিকেতের কথায়, ‘‘সিবিআইয়ের চার্জশিট যেন কলকাতা পুলিশের কথার কার্বনকপি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা জানতে চাই কেন খুন করা হল? এক জনের পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়।’’ উল্লেখ্য, সিবিআইয়ের দায়ের করা চার্জশিটে ‘মূল অভিযুক্ত’ হিসাবে এক জনের কথাই বলা হয়েছে। তাদের দাবি, কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের চিকিৎসক খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে।

    গণকনভেনশনে অনিকেত বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান রয়েছে। এখনও আমরা ভরসা রাখি। কিন্তু তার পরেও বলছি, আমরা কী দেখতে পেলাম। সুপ্রিম কোর্টে কর্মবিরতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু সিবিআই রিপোর্টকে ভয়ঙ্কর বলে মন্তব্য করা হলেও আমরা কিছু পাচ্ছি না।’’

    গণকনভেশনে দেবাশিসের অভিযোগ, তাঁদের আন্দোলন থামানোর চেষ্টা হয়েছে। ১৪ অগস্ট রাতের হামলার ঘটনা তারই উদাহরণ। ‘আমরণ অনশন’ প্রত্যাহার মানেই আন্দোলন থেমে যাওয়া নয়, শনিবার সেটাই বুঝিয়েছেন দেবাশিস। তিনি বলেন, ‘‘যত দিন না ন্যায়বিচার ছিনিয়ে আনতে পারব তত দিন আন্দোলন চলবে। দিনে দিনে তা আরও তীব্র হবে। গলা টিপে বন্ধ করা যাবে না। আমাদের আন্দোলন ন্যায়বিচারের আন্দোলন।’’

    জুনিয়র, সিনিয়র ডাক্তার ছাড়াও শনিবারের গণকনভেশনে উপস্থিত ছিলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের ‘আমরণ অনশন’ মঞ্চে আসা অনেক সাধারণ মানুষও শনিবার কনভেশনে এসেছেন। উড়েছে জাতীয় পতাকাও। তা দেখে দেবাশিস বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন শুধু জনিয়র ডাক্তারদের নয়, এটা নাগরিক আন্দোলন।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)