ছাত্রীকে দিয়ে জুতো পরিষ্কার করানোয় বিতর্কে শিক্ষিকা, নিন্দা করলেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, পতিরাম: চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে দিয়ে জুতো পরিষ্কার করিয়ে বিতর্কে শিক্ষিকা। ঘটনাটি হিলি ব্লকের ধলপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লস্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার স্কুলে এসে অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের সঙ্গে সামিল হওয়ার পর স্থানীয়রা জানান, স্কুলের শিক্ষিকারা বেশিরভাগ দিন দেরিতে আসেন। এদিকে খবর পেয়ে স্কুলে পৌঁছন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের হিলি সার্কেলের প্রতিনিধিরা। হিলি থানার পুলিসকে নিয়ে তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেন। ছাত্রীর মা মেহেবুবা খাতুনের দাবি, মেয়ে শিক্ষিকার জুতোয় পা দেওয়ার পর সরিও বলেছিল। কিন্তু শিক্ষিকা বলেন, সরি বললে হবে? যা, জুতো ধুয়ে নিয়ে আয়। এমনকি জুতো ধোয়ার সময়ও শিক্ষিকা বলেছেন, সাবান দিয়ে ভালো করে ধুতে। রেগে গিয়েই তিনি এই কাজ করেছেন। প্রধান শিক্ষিকাকে অভিযোগ জানিয়েছি। এই স্কুলে মিড ডে মিলসহ অন্যান্য বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। সেসবও জানানো হয়েছে।
অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষিকা ত্রিনয়নী সাহা কুণ্ডু। তাঁর সাফাই, ওই ছাত্রী তার জুতোয় মল লেগে থাকা অবস্থায় আমার জুতোয় পা দেয়। আমার পক্ষে সেটা পরিষ্কার করা সম্ভব ছিল না। তাই বলেছিলাম, ওর সঙ্গে আমার জুতোটাও ধুয়ে নিতে। জল দিয়ে ধোয়ার পর সাবান গুঁড়ো দিয়ে ধুতে বলেছিলাম। রাগ করে বা অন্য কিছু ভেবে করিনি। তবুও অন্যায় করে থাকলে আর এরকম হবে না।
এদিন স্কুলে এসে হিলি সার্কেলের স্কুল ইন্সপেক্টর সুমন সেনগুপ্ত বলেন, অভিভাবকদের লিখিত দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।
স্থানীয় ও ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে ৩৩ জন পড়ুয়া ও তিনজন শিক্ষিকা রয়েছেন। শুক্রবার স্কুলছুটির আগে ওই শিক্ষিকার জুতোয় পা দেয় ছাত্রী। তাকে দিয়েই সেটি পরিষ্কার করানো হয়। বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে অভিভাবককে জানালে শনিবার প্রতিবাদ জানাতে স্কুলে জড়ো হন অভিভাবকরা। অভিযুক্ত শিক্ষিকা এলেই শুরু হয় বিক্ষোভ ।
ঘটনার নিন্দা করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা। তাঁর মন্তব্য, অমানবিক কাজ করেছেন শিক্ষিকা। শিশুকে দিয়ে জুতো পরিষ্কার করানো মানা যায় না। এমন করলে স্কুলে বাচ্চারা আসবে? সোমবার ওই শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠানো হবে। প্রয়োজনে শো’কজ করব।