এই সময়, শিলিগুড়ি: বিনয় তামাংয়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে পাহাড়ে নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের একটি পরামর্শদাতা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত। তিনি শনিবার এই ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করতেই দ্রুত তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দেন বিনয়। তারপরই এই জল্পনা গতি পায়।
২০১৭ সালে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গ ছেড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দায়িত্ব নেন জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান। পরে সেই দল ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এ বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং কেন্দ্রে টিকিট না পেয়ে কংগ্রেস ছাড়েন বিনয়। প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থনের কথা বলেন। তারপর থেকে তিনি চুপচাপই ছিলেন। এ দিন ফের তাঁর বিবৃতি পাহাড়ের রাজনীতিতে শোরগোল ফেলেছে।যদিও এ ব্যাপারে বিনয় বলেন, ‘বিজেপিতে যোগ দেব কি না, সে ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত নিইনি।’ বিজেপির মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, ‘বিনয় তামাং বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কি না, সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না।’
পাহাড়ের রাজনীতিতে দলবদলে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন বিনয়। একদা মমতা ঘনিষ্ঠ হয়েও পরে তৃণমূল ছাড়েন তিনি। লোকসভার টিকিট প্রত্যাশী হয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। কিন্তু টিকিট না পেয়ে কংগ্রেস ছাড়তে সময় নেননি। পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলের মতে, কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা লোকসভা নির্বাচনে নির্দল হয়ে রাজু বিস্তের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় শাস্তির কোপে পড়তে পারেন।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কার্শিয়াং আসনে তিনি যে প্রার্থী হবেন না, তা একপ্রকার নিশ্চিত। তাই সেই আসনকে পাখির চোখ করে বিনয় তামাংয়ের বিজেপিতে যোগদান অস্বাভাবিক কিছু নয়। জিএনএলএফের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে বিনয় তামাং বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের আবেদন জানিয়েছিলেন। ফলে তিনি বিজেপিতে যোগ দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’
দাসাইয়ের পরে পাহাড়ে এখন ভাই টিকা উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। তার পরই বিনয় পদ্ম শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর। ২০০৯ সাল থেকে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়ে এলেও বিজেপির পাহাড়ে মুখ বলে কিছু নেই। কখনও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, কখনও জিএনএলএফের হাত ধরে মোদী-শাহদের জয় হাসিল করতে হয়েছে। বিনয় তামাং বিজেপিতে যোগ দিলে সেই মুখের ঘাটতি পূরণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।