বিচারক আদালতে পৌঁছেও ঢুকতে পারলেন না, মূল ফটকে তালা, তুলকালাম জলপাইগুড়িতে
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। রোজকার মতো আদালতে আসেন বিচারক। কিন্তু তিনি এসে পৌঁছলেও ভিতরে ঢুকতে পারছেন না। ততক্ষণে মামলাকারী, আইনজীবীরাও ওই আদালতে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন। কেউই আদালতের ভিতরে প্রবেশ করতে পারছেন না। কারণ আদালতের মূল ফটকে তালা লাগানো রয়েছে। ভিতরে একটি মোটরবাইক দেখা গেল। কিন্তু তার মালিককে দেখা যায়নি। তবে ওই মোটরবাইকের সামনে লেখা পুলিশ। কে এই তালা লাগাল? তার উত্তর খুঁজে পাওয়া গেল না। অগত্যা তুলকালাম ঘটনা দেখল জলপাইগুড়ি ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে খোলা হল তালা।
এই ঘটনায় অত্যন্ত বিরক্ত হন বিচারক। একইসঙ্গে আইনজীবী থেকে শুরু করে যাঁরা আদালতে কাজের জন্য এসেছিলেন তাঁরাও অত্যন্ত বিরক্ত হন। আদালতের মধ্যে এমন ঘটনা বিরল। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ওই মোটরবাইকের মালিক একজন ন্যাশনাল ভলেন্টিয়ার ফোর্সের কর্মী। তিনিই মোটরবাইকটি ঠিকঠাক রাখতে তালা লাগিয়ে চলে গিয়ে ছিলেন। আর শুক্রবার ওই আদালতের দরজা খুলতে পর্যন্ত ভুলে যান বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই এমন ঘটনার জন্য তাঁকে ক্লোজ করা হয়েছে। শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্তও।
বিচারক পদটি হেলাফেলার বিষয় নয়। এটা যে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের কক্ষ তা বড় বড় করে লেখা ছিল। তারপরেও এমন ভুল হল কেমন করে? উঠছে প্রশ্ন। বিচারক এসে আদালতে ঢুকতে না পারা বড় অপরাধের সমান। সেখানে শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়েই জলপাইগুড়ি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে এসে পৌঁছন বিচারক অপূর্বকুমার ঘোষ। কিন্তু মূল দরজা বন্ধ থাকায় আদালতের ভিতরে কাজ শিকেয় উঠে যায়। এখান থেকেই ক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে। কেন আদালতের মূল ফটকে তালা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। গোটা ঘটনায় অবাক হন বিচারক। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ গণপতকে বিচারক বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়ে দেন।
এই ঘটনার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে আদালতের ভিতর থেকে ওই মোটরবাইকটি সরিয়ে নিয়ে যায় ট্রাফিক পুলিশ। তারপর খোঁজ করা হয় মোটরবাইকটির মালিকের। অনেক খোঁজার পর জানা যায়, ওই মোটরবাইকের মালিক এনভিএফ কর্মী সদানন্দ দাস। তিনি রাতে বন বিভাগের অফিসের পাহারার দায়িত্বে আছেন। তাই সকালে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রোজ রাতে সদানন্দবাবু ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের ভিতরে নিজের মোটরবাইক রাখেন। আর মোটরবাইকের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় বা কেউ চুরি করতে না পারে তার জন্য তিনি তালা দিয়ে যান আদালতের গেটে। সেটাই সকালে উঠতে পারেননি বলে খোলা হয়নি। তাতেই বিচারককে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।