কলকাতার সমস্ত সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষা রাখতেই হবে, পুরসভায় বিরাট ঘোষণা, যাবে নোটিশ
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা ভাষা। ইতিমধ্য়েই এনিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। এবার শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে সেই প্রসঙ্গ উঠে এল। আর সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হল অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি কলকাতায় বিভিন্ন সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষাতে লিখতেই হবে। এটা বাধ্যতামূলক। এনিয়ে শীঘ্রই ওয়ার্ড ভিত্তিক নোটিশ পাঠানো হবে।
পুরসভার অধিবেশনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার জেরে আমরা অত্যন্ত খুশি। কলকাতা শহর যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে ইংরেজদের শাসনে ছিল সেকারণে এখানে তার প্রভাব রয়েছে। তবে বাংলা ভাষায় সাইনবোর্ড থাকবে। তার তলায় অন্য় ভাষাও থাকবে। বিল্ডিংয়ের নাম দোকানের নাম ইংরেজিতে থাকুক তাতে ক্ষতি নেই, কিন্তু তার উপরে বাংলাতেও লিখতে হবে। বাংলা ভাষায় লেখাটা বাধ্য়তামূলক। এনিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে নোটিশ যাবে।
তবে কলকাতা পুরসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। অনেকেরই মতে কোথাও যেন ক্রমশ কলকাতার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিল বাংলা ভাষা। কলকাতার বহু রাস্তা রয়েছে সেখানে বাংলা ভাষা কার্যত চলে না বললেই চলে। সেখানে কেবলমাত্র হিন্দি ভাষার দাপট। তবে এবার কলকাতায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কিংবা অন্য কোনও সাইনবোর্ডে লিখতেই হবে বাংলা ভাষা।
এবার প্রশ্ন পুরসভার এই উদ্যোগ কি কলকাতার সর্বত্র মান্যতা পাবে? কারণ কলকাতার একাধিক এলাকা রয়েছে যেখানে ব্যবসায়ী বাংলা ভাষা বলা তো দূরের কথা বুঝতেও পারেন না ভালো করে। দরদাম সবটাই চলে হিন্দিতে। এমনকী সেখানে বাংলা ভাষায় কথা বললে গুরুত্ব মেলে না। তবে এবার খুশির খবর, কলকাতায় সব রাস্তায় অন্তত সাইনবোর্ডে দেখা মিলবে বাংলার। অন্য ভাষার ব্যবহার হতে পারে সাইনবোর্ডে। কিন্তু তার পাশাপাশি বাংলা ভাষা ব্যবহার করতেই হবে।
এদিকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বাংলার সঙ্গেই মারাঠি, পালি, প্রাকৃত, অসমিয়াকেও ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী এনিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি মোদীকে লেখা সেই চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, আমরা এনিয়ে গবেষণা করেছি। একাধিক বৈজ্ঞানিক তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। সেখানে দেখা গিয়েছে বাংলা ভাষা প্রায় ২.৫ হাজার বছরের পুরনো। তিনি আরও লিখেছিলেন, এই ভাষা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য।
তিনি জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু বাংলা ভাষাকে সেই মর্যাদা দেয়নি। আড়াই হাজার বছরটা একটা রসিকতার বিষয় নয়।
এদিকে এর আগে তামিল, সংস্কৃত, তেলেগু, কন্নড়, মালায়লাম, ওড়িয়া ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। এদিকে এতদিন কেন বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হচ্ছিল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। এবার কলকাতায় মর্যাদা পাবে বাংলা।