নদীয়ায় অধিকাংশ স্থানে বিনা লড়াইয়ে জিততে চলেছে তৃণমূল
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: আজ নদীয়া জেলার ৭৫টি সঙ্ঘে নির্বাচন হতে চলেছে। যদিও অধিকাংশ জায়গাতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাবেন প্রার্থীরা। এই সঙ্ঘের ভোটেও দাপট দেখিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এই নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রতীক থাকে না। কিন্তু পরোক্ষভাবে প্রার্থী চয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাজনৈতিক দলগুলো। বলাবাহুল্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়া সঙ্ঘগুলি অধিকাংশই পরোক্ষভাবে তৃণমূলের দখল যেতে চলেছে। হাতেগোনা কিছু জায়গায় ভোট হবে। সেখানেও ঘাসফুল সমর্থিত প্রার্থীদের জয় একপ্রকার নিশ্চিত। নিচুতলায় বিরোধী মুখ না থাকার জন্যই অন্যান্য রাজনৈতিক দল তাদের সমর্থিত প্রার্থী বাছাই করতে পারেনি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ভোটের জন্য বেশ কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। তবে ভোট শান্তিপূর্ণই হবে। আগামী দিনে নতুন বোর্ড স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় ১৮৫টি সঙ্ঘ রয়েছে। এর মধ্যে ৭৫টি সঙ্ঘে নির্বাচন হবে। কারণ সেখানে সঙ্ঘের বোর্ডের মেয়াদকাল উত্তীর্ণ হয়েছে। ১০টি সঙ্ঘের বোর্ডের মেয়াদকাল শেষ হয়নি। তাদেরও আগামী তিন-চারমাসের মধ্যেই ভোট হবে। কিন্তু বাকি ১০০টি সঙ্ঘে এই মুহূর্তে ভোট হবে না। কারণ সেখানে স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। আর কোথাও স্পেশাল অফিসার নিয়োগ হলে, তার একটি নির্দিষ্ট সময় পরেই ভোট হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ৭৫টির মধ্যে ৬৪টি সঙ্ঘে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জিততে চলেছেন। আজ রবিবার তাঁদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে। বাকি ১১টি সঙ্ঘে নির্বাচন হবে। ৭৫টি সঙ্ঘের মধ্যে মোট প্রায় ৭৫০টি আসনে প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে বিভিন্ন সঙ্ঘের মাত্র ৪৬টি আসনে ভোট হচ্ছে।
উল্লেখ্য, একটি পঞ্চায়েত অনেকগুলো স্বনির্ভর গোষ্ঠী নিয়ে একটি সঙ্ঘে তৈরি হয়। সেই সঙ্ঘের নীচে থাকে বেশ কয়েকটি উপসঙ্ঘ। সেই উপসঙ্ঘ তৈরি হয় অনেকগুলোই স্বনির্ভর গোষ্ঠী দিয়ে। সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে দশজন করে সদস্য থাকেন। তাঁরাই প্রতিনিধি ঠিক করেন। সেই প্রতিনিধিই শুধু ভোট দিতে পারেন। তারপর উপসঙ্ঘে এসে সেই প্রতিনিধি ভোট দেন। তার ভিত্তিতেই সঙ্ঘের বোর্ড গঠন হয়। এই বোর্ড বিভিন্ন সময় স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে কাজের জন্য লোন দেয়। তার জন্য সঙ্ঘের ম্যানেজার, ক্যাশিয়ারের পদে বসানো হয় নির্বাচিত প্রতিনিধিকে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই জেলার সিংহভাগ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পরোক্ষভাবে ঘাসফুল শিবিরের তরফ থেকে পরিচালনা করা হয়। এমনও দেখা যায়, সঙ্ঘের সদস্যরাও রাজনৈতিক দলের পদাধিকারী। যার ফলে এলাকায় তাঁদের দাপট থাকে অনেক। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা সঙ্ঘগুলোর অধিকাংশই শাসকদলের পক্ষেই থাকছে। তার উপর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, আমাদের রাজ্য সরকার মহিলাদের স্বাবলম্বী করতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা যাতে সহজে ব্যাঙ্ক থেকে লোন পান, তারও ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। বিজেপির মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদার বলেন, যাঁরা ভোটে লড়ছেন, তাঁদের অনেকেই বিজেপির ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী। আর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অধিকাংশ কাজই কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগে হয়ে থাকে।