রানাঘাটে মূক ও বধির বাবার সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে আর দেখে না দুই ছেলে
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: ভুল বুঝিয়ে মূক ও বধির বাবার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাঁর প্রতিবন্ধকতার সুযোগ নিয়ে দুই ছেলে জমি লিখিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বৃদ্ধ। শুধু তাই নয়, দুই ছেলের বিরুদ্ধে মহকুমা শাসকের কাছে লেখা একটা চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, ছেলেরা কেউই তাঁর ভরণপোষনের দায়িত্ব নেয় না। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন রানাঘাটের মহকুমা শাসক ভরত সিং।
সম্প্রতি দুই ছেলের বিরুদ্ধে ভুল বুঝিয়ে এবং জোর করে সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ তুলে রানাঘাট মহকুমা শাসকের কাছে চিঠি পাঠান এক বৃদ্ধ। তাঁর নাম নির্মল চৌধুরী। হাঁসখালি থানার বগুলা কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি।
অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, দুই ছেলে গণেশ এবং চন্দন তাঁর কোনও খেয়াল রাখে না। এমনকী খেতে পর্যন্ত দেয় না। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথমে তার বড় ছেলে গণেশ ভুল বুঝিয়ে তাঁকে নিয়ে যায় কৃষ্ণগঞ্জ এডিএসআর অফিসে। সেখানে জোর করে তাঁকে দিয়ে তিনটি দলিলে লিখিয়ে নেয় চন্দননগর মৌজার ৮৫ শতক জমি। একই পদ্ধতি অবলম্বন করে চলতি বছর মার্চ মাসে ছোট ছেলে চন্দন চৌধুরী দু’টি দলিলে চন্দননগর মৌজার ১০৬ শতক জমি লিখিয়ে নেয় তাঁর থেকে। স্বাভাবিকভাবেই জোর করে সমস্ত জমি দুই ছেলে লিখিয়ে নেওয়ার পর সর্বস্বান্ত হয়ে যান নির্মলবাবু। তাই ভেবেছিলেন, অন্তত দুই ছেলে খেয়াল রাখবে তাঁর। বার্ধক্যের কারণে নিজস্ব কোনও আয় নেই। কিন্তু বাস্তবে হয় ঠিক উল্টো। বাবাকে দেখার পরিবর্তে, জমি লিখিয়ে নেওয়ার পর উল্টো সুর শোনা যায় দুই ছেলের গলায়। ফলে বাধ্য হয়েই রানাঘাট মহকুমা শাসকের কাছে নিজের অভিযোগের কথা তুলে ধরে চিঠি লেখে নির্মলবাবু। তাঁর দাবি, মহকুমা শাসক যেন উপযুক্ত পদক্ষেপ নেন এবং জোর করে লিখিয়ে নেওয়া পাঁচটি দলিল বাতিল গণ্য করেন। এমনকী তাঁর আবেদন, দুই ছেলে যেন বাবাকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে কুড়ি হাজার টাকা দেয়, তার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যেও আবেদন করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রানাঘাট মহকুমা শাসক ভরত সিং বলেন, আমি অভিযোগপত্র পেয়েছি। ‘সিনিয়র সিটিজেন মেইন্টেনেন্স অ্যাক্ট’ অনুযায়ী মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি। পুলিস এবং প্রশাসন উভয় পক্ষই বিষয়টির তদন্ত করে দেখছে। সমস্ত ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানার জন্য ওই বৃদ্ধের বড় ছেলে গণেশ চৌধুরীকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।