সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: বাদনা পরবের প্রস্তুতিতে বাধ সাধলো ঘূর্ণিঝড় ডানা। টানা দু’দিন দিনভর বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির জেরে পুরুলিয়া তথা জঙ্গলমহলের বিভিন্ন গ্রামে বাদনা পরবের প্রস্তুতিতে বেশ খানিকটা সমস্যা তৈরি হল বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। মাটির বিভিন্ন প্রলেপ দিয়ে প্রাকৃতিক রঙে বাড়ির দেওয়াল সাজানোর কাজে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সমস্যায় পড়েছেন মৃৎশিল্পীরাও। প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া জেলা তথা জঙ্গলমহল এলাকাজুড়ে বাদনা পরবকে ঘিরে ফি বছর ব্যাপক উন্মাদানা দেখা যায়। কালীপূজার সময় এই পরব হয়। কিন্তু বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু হয়। গ্রামের প্রায় প্রত্যেকটি মাটির বাড়িতেই নতুন করে মাটির প্রলেপ দেওয়ার পাশাপাশি হরেক রকম রং দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। কোথাও মাটির দেওয়ালে করা হয় আলপনা, কোথাও আবার দেওয়ালে নানা চিত্র অঙ্কন হয়। এছাড়া বাড়ির উঠোনেও নতুন করে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়। পুরুলিয়ার বলরামপুরের মালতি মাহাত নামে গৃহবধূ জানান, বাদনা পরবের কয়েকদিন আগে থেকেই কাজ শুরু হয়। কিন্তু অসময়ে বৃষ্টির জেরে কাজ একদম আটকে গেল। সেই সঙ্গে কিছু দেওয়ালে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছিল। বৃষ্টিতে সেগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন দেওয়াল শুকনোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বাগমুণ্ডির গৃহবধূ অভাবী মাহাত বলেন, হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। এরমধ্যে রোদ ঝলমলে আকাশ নাহলে কাজ করা যাচ্ছে না। মাটি দিয়েই অধিকাংশ কাজ হয়। বৃষ্টির মধ্যে মাটিতে কাজ করা যাচ্ছে না। বেশ কিছু দেওয়ালে নতুন করে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাদনা পরবের আগে গোটা ঘর পরিষ্কার করে নতুন করে সাজিয়ে তোলাটাই রীতি। এর ফলে একদিকে যেমন ঘরের সংস্কারও হয়, সেই সঙ্গে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমে যায়। অন্যদিকে বৃষ্টির জেরে সমস্যায় পড়েছেন মৃৎশিল্পীরাও। প্রদীপ সহ দীপাবলির নানান উপকরণ তৈরিতেও সমস্যা হচ্ছে। তৈরি হওয়া বহু মাটির প্রদীপ নষ্ট হয়েছে। শিল্পীরা জানান, আগের চেয়ে এখন মাটির প্রদীপের বিক্রি অনেকটাই কমেছে, তার ওপর বৃষ্টিতে আরও ক্ষতি হল।