হুমকি দিয়ে অনলাইন প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়ে অনলাইন প্রতারণার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে শিলিগুড়ি লাগোয়া এলাকার ছয় বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করল বারাকপুর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। অনলাইন প্রতারণায় এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট একটি নতুন ফাঁদ। প্রতারকরা নিজেদের শুল্কদপ্তরের আধিকারিক কখনও আবার ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের ইনসপেক্টর পরিচয় দিয়ে ফোনে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়ে মোটা টাকা দাবি করত। ফোন করে বলা হতো, আয় ব্যয়ের ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের রয়েছে। এই অনিয়ম বা অবৈধ কাজের জন্য তাকে গ্রেপ্তার করতে যাওয়া হবে। তারপর টোপ দেওয়া হতো, টাকা দিলে সমাধান হয়ে যাবে। সেই মতো মোটা টাকা চেয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিত প্রতারকরা। সেই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ার পর প্রতারিতকে আদালতের নকল আইনি কাগজ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এই টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতারকরা নিজেদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে না। অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে সেখানে টাকা জমা করতে বলা হয়। এই প্রতারণা চক্রে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া দেওয়ার অভিযোগে শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া কানকাটা মোড় এলাকা থেকে শুক্রবার রাতে ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রিজু রায়, পার্থ মণ্ডল, সোমনাথ তরফদার, শুভম বারিক, সুদীপ দে ও শুভ দাস। শনিবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানায় বারাকপুর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।
পুলিস সূত্রে খবর, ২৫ সেপ্টেম্বর বারাকপুর সাইবার ক্রাইম থানায় এক ব্যক্তি ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই খভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে বারাকপুর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। তদন্তে দেখা যায়, একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে এই প্রতারণা চক্র চলছে। ভাড়া করা সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে দেশ বিদেশ থেকে টাকার লেনদেন হতো। শিলিগুড়ি ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন কানকাটা মোড়ের ছ’জন বাসিন্দাকে চিহ্নিত করে পুলিস। এদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। তারপর বারাকপুর সাইবার থানার পুলিস শুক্রবার শিলিগুড়িতে আসে। আশিঘর পুলিসের সহযোগিতায় গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কানকাটা মোড়ের কাছে একটি বাড়ি থেকে ছ’জনকে গ্রেপ্তার করে সাইবার ক্রাইম আধিকারিকরা।
ধৃতদের থেকে কয়েকটি এটিএম কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবই, সিম কার্ড ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। ধৃতদের জেরা এই চক্রের মূল মাথাকে খোঁজে তদন্ত শুরু করবে বারাকপুর সাইবার ক্রাইম থানা।