নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শস্যবিমার কাজে গতি নেই জলপাইগুড়িতে। জেলাশাসকের কড়া নির্দেশের পরও টার্গেটের অর্ধেক পূরণ করতেই হিমশিম অবস্থা কৃষিদপ্তরের। আমনের মরশুমে গতবার ৭৫ হাজার কৃষককে বাংলা শস্যবিমা যোজনার আওতায় আনা গিয়েছিল। সেইমতোই এবার টার্গেট বাড়িয়ে এক লক্ষ করা হয়। কিন্তু বাড়তি সময়ের পর এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫০ হাজার কৃষকের নাম শস্যবিমায় নথিভুক্ত করানো সম্ভব হয়েছে। ধান কাটার মরশুম প্রায় শুরুর মুখে। ফলে আর কত কৃষককে শস্যবিমার আওতায় আনা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয়ে কৃষি আধিকারিকদেরই একাংশ।
জলপাইগুড়ি জেলা উপ কৃষি অধিকর্তা গোপালচন্দ্র সাহা বলেন, আমনের মরশুমে এখনও পর্যন্ত জেলায় ৫০ হাজারের মতো কৃষককে শস্যবিমার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এখন সবে আউশ ধান উঠতে শুরু করেছে। আমন উঠতে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ হয়ে যাবে। ফলে এখনও হাতে কিছুটা সময় রয়েছে। আরও কিছু কৃষককে শস্যবিমার আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাঁর দাবি, শস্যবিমার অধীনে থাকা কৃষকদের ধান কাটার পর যদি মাঠে ফসল পড়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ১৫দিন পর্যন্ত বিমার কভারেজ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ, ওই সময়ের মধ্যে যদি কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কাটার পর মাঠে জড়ো করে রাখা ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে বিমা সংস্থার তরফে ক্ষতিপূরণ পাবেন কৃষক।
এদিকে, জলপাইগুড়িতে আগামী সপ্তাহ থেকেই শস্যবিমায় আলুচাষিদের নাম নথিভুক্তির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, এ বছর বিমার প্রিমিয়াম আর আলুচাষিদের দিতে হবে না। রাজ্য সরকারই তা বহন করবে। যেহেতু আলুচাষে ঝুঁকি বেশি থাকে, তাই জেলার সমস্ত আলুচাষিকেই বিমার আওতায় যাতে আনা যায়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে কৃষিদপ্তর।
জলপাইগুড়ি জেলায় মোটামুটি ৩৩ হাজার হেক্টরের মতো জমিতে আলুচাষ হয়ে থাকে। তবে এবার দাম ভালো পেয়েছেন চাষিরা। ফলে এবার আলু চাষ অনেকটাই বাড়তে পারে বলে মনে করছেন কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে এবছর জলপাইগুড়িতে প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আলুচাষ হবে ধরে নিয়েই এগচ্ছে কৃষিদপ্তর। উপ কৃষি অধিকর্তার অবশ্য দাবি, এবার আলুচাষের জন্য বীজ ও সার নিয়ে কোনও সমস্যাই নেই। জেলায় আলুচাষের জন্য মোট যে পরিমাণ সার প্রয়োজন, তার চেয়ে ইতিমধ্যেই অনেক বেশি ঢুকেছে।