• সিঁথিতে গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইবাজ আদতে ডাকাতই, তদন্তে নয়া মোড়
    বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ধরা পড়েছিল ছিনতাইবাজ হিসেবে। তদন্ত করতে গিয়ে জানা গেল, আসলে সে ডাকাত। নিজস্ব দলও আছে। তার বিরুদ্ধে চার-চারটি ডাকাতির মামলা ঝুলে রয়েছে। এমনকী, আদালত থেকে পরোয়ানা পর্যন্ত বেরিয়েছে। গোরা শা’র এই কাজকর্ম দেখে তাজ্জব তদন্তকারীরা। তাঁরা এ নিয়ে আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছেন।

    কয়েকদিন আগে কাশীপুর, সিঁথি, বরানগর এলাকায় পরপর ছিনতাইয়ের অভিযোগে ধরা পড়ে গোরা। তদন্তকারীদের জেরায় জানায়, ছিনতাই করাই তার পেশা। গাড়ি চালানোর সঙ্গে এটাকে ‘পার্ট টাইম জব’ হিসেবে বেছে নিয়েছে সে। কিন্তু তদন্তকারীদের ভুল ভাঙে কাঁথি থানার পুলিস যোগাযোগ করার পর। তারা জানায়, সেখানে ডাকাতির অভিযোগে দু’টি মামলা আছে তার নামে। এমনকী, তার বিরুদ্ধে জারি হওয়া পরোয়ানার কপিও পাঠায় তারা। এরপর পূর্ব মেদিনীপুরের আরও একটি থানা থেকেও ওয়ারেন্টের কপি আসে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আছে বলে জানা যায়। এর ভিত্তিতে জেরা শুরু হয় গোরাকে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পুলিসের কাছে ডাকাতির কথা কবুল করে সে। তবে ডাকাতির মামলায় একবারও ধরা পড়েনি গোরা। তাই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এখান থেকেই তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়। অভিযুক্ত পুলিসকে জানিয়েছে, পাঁচ-ছ’জনের একটি দল রয়েছে তার। দলের ছেলেরা বারাকপুর, নৈহাটি, খড়গপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। গাড়ি চালানোর সুবাদে তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। বাড়তি রোজগারের জন্যই বিভিন্ন গাড়িতে ডাকাতি করত তারা। ডাকাতির জন্য তারা বেছে নিত মূলত হাইওয়েকে। ডাকাতিতে হাত পাকানোর পর অবশ্য বিভিন্ন বাড়ি বা দোকানেও ডাকাতি করতে শুরু করে তারা। কোনও জায়গায় অপারেশনের আগে রীতিমতো রেকি করত গোরার দলবল। বাইক নিয়েই তারা হানা দিত বিভিন্ন জায়গায়। গাড়ির জোগান দিত খড়্গপুরের এক দুষ্কৃতী। মূলত সোনার গয়নাকেই টার্গেট করত তারা। ডাকাতি করে পাওয়া সোনাদানা তারা টিটাগড়ের তিনটি সোনার দোকানে বিক্রি  করত। গোরার সঙ্গে বিভিন্ন জেলার ডাকাতদলের যোগাযোগ আছে। বিভিন্ন জায়গায় লুটপাটের সময় তারা এই স্থানীয় ডাকাতদের সাহায্য নিত বলে জানা গিয়েছে। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথিতে একবার ডাকাতিতে বাধা পেয়ে সে একজনকে খুনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিসি ধরপাকড়ের কারণে সেখান থেকে পালিয়ে গা ঢাকা দেয়। এক সময় দলের সদস্যরা একে একে ধরা পড়ে যাওয়ায় ডাকাতিতে মন্দা নেমে আসে। গোরা নিজেও ডাকাতি ছেড়ে গাড়ি চালানোর পুরনো পেশায় ফিরে আসে। এরমধ্যে সে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। ফের দল গড়ে গোরা কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় ছিনতাই করে বেড়াচ্ছিল। তার শাগরেদদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা কোথায় কোথায় ডাকাতি করেছে, সেই তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)