এই সময়: সামান্য একজন ‘এজেন্ট।’ যিনি কমিশনের বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দিতেন। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৬৩ কোটি টাকার! শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সেই ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের বিপুল সম্পত্তি অবশেষে বাজেয়াপ্ত করল ইডি। সব মিলিয়ে ওই মামলায় মোট ৫৪৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি এখনও পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার।নারকেলডাঙা মেন রোডে টালির চালের বাড়িতে পরিবার নিয়ে এক সময়ে থাকতেন প্রসন্ন। কয়েক বছরের মধ্যেই দার্জিলিং থেকে দিঘা, এমনকী ডুয়ার্সেও হোটেল এবং রিসর্টের মালিক হয়ে যান তিনি। নিউ টাউনে কিনে ফেলেন একটি আস্ত ভিলা। নিজের নামে তো বটেই, স্ত্রীর নামেও বিঘের পর বিঘে জমি কিনতে থাকেন অল্প দিনের মধ্যে। শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে সেই সব সম্পত্তির উৎস জানতে পারে ইডি।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্রসন্নর আঁতাঁত ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। অযোগ্যদের শিক্ষা দপ্তরে চাকরি দিয়ে বিভিন্ন সংস্থার আড়ালে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছিল বলে আদালতে দাবি করে ইডি। অভিযোগ, হাত বদল হয়ে ‘মিডলম্যান’ প্রসন্নর মাধ্যমে সেই টাকার ভাগ পৌঁছে গিয়েছিল শিক্ষা দপ্তরের একেবারে নিচুতলার কর্মী থেকে শীর্ষ কর্তাদের কাছেও। এই বিষয়ে তদন্তে নেমে প্রসন্নর বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ পান গোয়েন্দারা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগের মামলায় তাঁকে প্রথম গ্রেপ্তার করে সিবিআই। এরপর প্রসন্নর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে ইডিও।
সূত্রের খবর, প্রসন্নের নামে থাকা শ্যামপুর, সুন্দরবন, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের ৫টি হোটেল এবং রিসর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শ্রী দুর্গা ডিলকম প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ১২০টি জমি এবং প্রসন্নের নিজের নামে আরও ৬৪টি জমি এবং ১২টি ফ্ল্যাট, অফিস, দোকানের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই সব সম্পত্তি ছাড়াও স্ত্রী কাজল সোনি রায়ের নামে থাকা ৩৪টি জমি এবং ১৭টি ফ্ল্যাট, অফিস এবং দোকানও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে যার বাজারমূল্য প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা। ইডির বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-তে বেআইনি ভাবে ৩৪৩২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রসন্নর মাধ্যমে। যার মধ্যে গ্রুপ সি-তে ১১২৫ জন এবং এবং গ্রুপ ডি- তে ২৩০৭ জনকে টাকার বিনিময়ে ঢোকানো হয়।