• নুয়ে পড়া ধানজমিতে জমেছে জল, মাথায় হাত কৃষকদের
    বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: শুক্রবার দিনভর বৃষ্টি হওয়ায় বহু চাষি মাঠে যেতে পারেননি। অনেকের ধারণা ছিল নুয়ে পড়া ধান গাছ বেঁধে দিলে ক্ষতি এড়ানো যাবে। কিন্তু শনিবার মাঠে গিয়ে তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নুয়ে পড়া ধানজমিতে কোথাও কোথাও হাঁটুসমান জল জমে গিয়েছে। শিষ ভেঙে জলে ডুবে রয়েছে। এই গাছ বেঁধে রক্ষা করা খুব কঠিন, এমনটাই জানাচ্ছেন চাষিরা। তাঁরা বলেন, এইসময় জোরালো হাওয়ায় প্রায় প্রতি বছরই ধান গাছ পড়ে যায়। তাতে তেমন ক্ষতি হয় না। চাষিরা ধান গাছ গোছা করে বেঁধে দিতেন। কিন্তু, এবার সেই সুযোগ নেই। বহু জমির ধান গাছ রক্ষা করা সম্ভব হবে না। ফলন তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। 

    শুক্রবার কৃষি দপ্তরের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, প্রায় ১৭হাজার হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। শনিবার সেটা বেড়ে ৩৪হাজার হেক্টর হয়েছে। বিমার ক্ষতিপূরণই চাষিদের ভরসা। সরকার বিমার সময়সীমা বাড়ানোয় চাষিরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। কৃষি আধিকারিক(ডিডিএ) নকুল মাইতি বলেন, সরকারি আধিকারিকরা মাঠে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করছেন। গলসির চাষি রাজু পাত্র বলেন, এবার ধানের শিষ ভালোই পুষ্ট হয়েছিল। ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ‘ডানা’ এসে সব তছনছ করে দিয়ে গেল। এবছর জলের অভাবে ধানবীজ রোপণ করতে বেগ পেতে হয়েছিল। কিন্তু বীজ বপনের পর আর জলের সমস্যা হয়নি। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় গাছ দ্রুত বেড়েছিল। 

    অপর এক চাষি বলেন, সুগন্ধি ধানগাছের সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। এই গাছ অনেক বেশি লম্বা হয়। শিষ চলে আসায় ভার বেড়েছিল। জোরে হাওয়া দিতেই গাছ নুয়ে পড়েছে। শুক্রবার বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে জল জমে গিয়েছে। যেসব জমিতে ধানের শিষ জলে ডুবে রয়েছে সেখানে ব্যাপক ক্ষতি হবে। পুষ্ট হওয়া ধান চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যাবে। সুগন্ধির পাশাপাশি স্বর্ণ ধানের জমিগুলিও ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিমার টাকা পাওয়া গেলে আর্থিক ধাক্কা কিছুটা সামলানো যাবে। তা না হলে চাষিদের পথে বসতে হবে। 

    গলসি, খণ্ডঘোষ, রায়না, পূর্বস্থলী, মেমারি সহ জেলার সব এলাকার চাষিদের রাতের ঘুম চলে গিয়েছে। তাঁরা এখন বিমার দিকে তাকিয়ে আছেন। এক আধিকারিক বলেন, জমি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষিরা নিশ্চয়ই ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে সব এলাকায় সমান ক্ষতি হয়নি। ক্ষতির পরিমাণ কীভাবে চিহ্নিত করা হবে, তার স্পর্ষ্ট গাইডলাইন এখনও আসেনি। তবে সরকার বিমার সময়সীমা বাড়িয়েছে। চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
  • Link to this news (বর্তমান)