নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে ভারী বৃষ্টির জেরে বাঁকুড়া শহরে একটি পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দারাগোড়া এলাকার ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। রাস্তার পাশেই রয়েছে জীর্ণ এই বাড়িটি। এদিনের ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও সামান্য অসাবধানতায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। ওই বাড়িতে তিনটি পরিবার ভাড়া থাকে। সেখানে এক দর্জির দোকানও রয়েছে। বাড়ির মালিক দীর্ঘদিন ধরেই ভিন রাজ্যে থাকেন। ভাড়াটিয়ারা জানিয়েছেন, বছর কুড়ি আগে পুরসভার তরফে বাড়িটিকে বসবাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়। বিপজ্জনক ঘোষণার পর সেটি ভেঙে ফেলতেও বলা হয়। কিন্তু, মালিক সেটি না ভেঙে অন্যত্র চলে যান। ঘটনায় পুরসভার নজরদারির বিষয়টিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তবে এদিনের ঘটনার পর বাড়িটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবারগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার বলেন, নোটিসের বিষয়টি অনেক বছর আগের কথা। তখন কী নোটিস দেওয়া হয়েছিল, তা পুরসভার নথি ঘেঁটে দেখতে হবে। আপাতত আমরা বাসিন্দাদের সুরক্ষার কথা ভেবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। দ্রুত বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে।
বিষ্ণু শর্মা নামে ওই বাড়ির এক ভাড়াটিয়া বলেন, আগে বাড়িতে মোট ১১টি পরিবার ভাড়া থাকত। বর্তমানে বাড়িতে আমরা তিনটি পরিবার ও একটি দোকান রয়েছে। বাড়ির চাতালের এক কোণে কুয়ো ও পুরসভার ‘টাইম কল’ রয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আমার মেয়ে ওই কল থেকে জল নিচ্ছিল। তখন চুন-সুরকি থেকে দু’-একটি করে ইট খসতে শুরু করে। মেয়ে দৌড়ে সেখান থেকে সরে যাওয়ার পর বাড়ির একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। দ্রুত মেয়ে না সরলে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে যেত। তিনি আরও বলেন, আমি পরিবার নিয়ে প্রায় ৫১ বছর বাড়িটিতে বসবাস করছি। বাড়ির মালিককে সংস্কারের কথা বহুবার জানিয়েছি। কিন্তু, তিনি আমাদের আবেদন-নিবেদনে কোনও কর্ণপাত করেননি। বর্তমানে তিনি মুম্বইয়ে থাকেন। তাঁর সঙ্গে আমাদের তেমন যোগাযোগ নেই। ২০ বছর আগে পুরসভার তরফে বাড়িটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে নোটিস ঝোলানো হয়েছিল। তারপর বাড়ির মালিক বা পুরসভা কোনও পক্ষই এব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আশ্রয় হারিয়ে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি।