সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস না দিলে কোনও কিছুই যেন পূর্ণতা পায় না। পুজোর ছুটিতে এখন অনেকেরই ডেস্টিনেশন দার্জিলিং বা হিমাচলপ্রদেশ। কেউ কেউ আবার এই সুযোগে কাশ্মীর ট্যুর সেরে ফেলছেন। বাড়ি ছাড়ার আগে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ট্রাভেলিং স্ট্যাটাস’ আপডেট দিচ্ছেন। ঘুরতে গিয়ে কোথায় থাকছেন, সেটাও সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন। পুলিস আধিকারিকরা বলছেন, এটা করেই অনেকে নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন। সুযোগের সদব্যবহার করছে ‘স্মার্ট চোররা’। কে কখন বাড়ি ছাড়ছে, তা জানতে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় আড়ি পাতছে। তারপর সেই ফাঁকা বাড়িতে হানা দিচ্ছে।
সম্প্রতি বর্ধমান শহরের কয়েকটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। কালনা গেটের এক ব্যবসায়ী ছুটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে এসে দেখেন, আলমারি থেকে মূল্যবান সামগ্রী উধাও। শহরে আরও একটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস আপোডেট দিয়েছিলেন। পুলিস ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, কম বয়সিদের অনেকেই নেশায় আসক্ত হয়ে গিয়েছে। কেউ গাঁজা, আবার কেউ হেরোইনের নেশা করে। নেশার খরচ জোগাড় করতে অনেকে চুরি করতেও পিছপা হচ্ছে না। তাদের অনেকেই বেশ শিক্ষিত। হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। পাড়ার কেউ ঘুরতে যাওয়ার স্ট্যাটাস দিলে তারা সুযোগ নিচ্ছে। বাড়ি ফাঁকা রেখে ঘুরতে যাওয়ার সময় এধরনের তথ্য না জানানোই ভালো।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চুরি করার আগে দুষ্কৃতীরা তথ্য সংগ্রহ করে। কোন বাড়ি ফাঁকা থাকছে, তা জানার জন্য তারা স্থানীয় সোর্সদের কাজে লাগাত। এখন তাদের অন্যতম হাতিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া। স্মার্ট চোরদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিস। কয়েক মাস আগে উল্লাসের কাছে একটি আবাসনে এক চিকিৎসকের বাড়িতে চুরি হয়। তিনি সপরিবারে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনিও দেখেন নগদ টাকা সহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী চুরি গিয়েছে। ওই ঘটনায় পুলিস এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। নীলপুরের একটি বাড়িতেও চুরি হয়েছিল। সেই ঘটনার কিনারও পুলিস করতে পারেনি। স্থানীয়দের দাবি, নেশার ঠেক বন্ধ না করলে চুরি ঠেকানো সম্ভব হবে না। শহরে খুব সহজে নেশার সামগ্রী পাওয়া যায়। তা জোগাড় করতেই অনেক শিক্ষিত যুবকও হাত সাফাই করছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করছে। অতিরিক্ত পুলিস সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন কর্মশালা করা হয়। ব্যক্তিগত তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করাই ভালো।