এলাকায় নেই কোনও উচ্চ বিদ্যালয়, পড়াশোনা ছাড়ছে বেলপাহাড়ীর একাধিক প্রান্তিক গ্রামের পড়ুয়ারা
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: এলাকায় কোনও উচ্চ বিদ্যালয় নেই। যে কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে তার দূরত্ব ১৫ থেকে ২৪ কিলোমিটার। ফলে স্থানীয় এমএসকে থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর বেশিরভাগ পড়ুয়ারা পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে দিচ্ছে। বেলপাহাড়ীর প্রান্তিক ৭ থেকে ৮টি গ্রামের পড়ুয়ারা এই পরিস্থিতির শিকার বলে অভিভাবকদের দাবি। অভিভাবকরা বলেন দেড় বছর আগে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর কাছে কাঁকড়াঝোড় এমএসকে কেন্দ্রটি কি মাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নীতকরণ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
জানা গিয়েছে, বিনপুর-২ ব্লকের কাঁকঝোড় এমএসকে কেন্দ্রে আমলাশোল, আমঝর্ণা জিজারধরা, সাতবাঁকি বগডুবা, কাঁকড়াঝোড়, তেলিখানা সহ ৭-৮টি গ্রামের পড়ুয়ারা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা সুযোগ পায়। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণের পরে এই এলাকার পড়ুয়ারা ২৪ কিলোমিটার দূরে বেলপাহাড়ী হাইস্কুল, ২৪ কিলোমিটার দূরে বাঁশপাহাড়ী হাইস্কুল অথবা ১৫ কিলোমিটার দূরে ওদলচুয়া উচ্চ বিদ্যালয় যাতায়াত করে পড়াশোনা করতে হয়।
এই নিয়ে আমলাশোল গ্রামের বাসিন্দা হাঁদু সিং মুড়া বলেন, আমাদের এই এলাকায় শিক্ষার ব্যবস্থা উন্নীতকরণ করা দরকার। উচ্চশিক্ষার জন্য স্কুলগুলি ১৫ থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে। এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় এলাকার ৭-৮ টি গ্রামের পড়ুয়ারা কাঁকড়াঝোড় এমএসকে থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পরে আর কেউ পড়াশোনা করে না। পড়াশোনা ছেড়ে ভিনরাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছে। আমরা এলাকার সমস্ত গ্রামবাসী প্রায় দেড় বছর আগে এই এমএসকেটিতে যাতে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা চালু করা হয় তার জন্য রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও তা সেই পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। কাঁকড়াঝোড় গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, অনেক ছাত্রী আছে তারা অত দূরের স্কুলে সাইকেলে যাতায়াত করতে পারে না। অনেকেই নিয়মিত বাস ভাড়া জোগাড় করতে পারে না। একপ্রকার বাধ্য হয়েই তারা এখানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে স্কুল ছেড়ে দেয়।
এই নিয়ে বিনপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ সিং সর্দার বলেন, এলাকার মানুষের লিখিত আবেদনটি আমরা ব্লক প্রশাসন থেকে শীর্ষ প্রশাসন ও বিভাগীয় দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। আগামী দিনে হয়তো কাঁকড়াঝোড়ে উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ হতে পারে।
এই নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুমন সাহু বলেন, পুজোর ছুটি কাটলেই উচ্চ বিদ্যালয় নির্মাণ নিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের আবেদনের বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদ ও ডিআই এর সাথে আলোচনা করে দেখব। যাতে সেখানে উচ্চ বিদ্যালয় তৈরি হয়।