সংবাদদাতা, কাঁথি: কাঁথি-১ ব্লকের বাদলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ওড়িশা কোস্ট ক্যানেলের উপর চারটি কাঠের সেতুরই বেহাল দশা। এই সেতুগুলির মধ্যে ‘অমর সেতুর’ অবস্থা সঙ্গীন। সেতুটির কয়েকটি জায়গায় পাটাতন ভেঙে গিয়েছে। বর্তমানে পাটাতন ভেঙে মাঝখান থেকে কার্যত ঝুলছে। বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকায় এলাকার বাসিন্দারা প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করছে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি সেচদপ্তরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ও বিডিওর কাছে চিঠি দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান সুদেষ্ণা ঘোষ। জেলাশাসক ও জেলা পরিষদের সভাধিপতির কাছেও একই আর্জি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, সেতুগুলি হয় শক্তপোক্তভাবে মেরামতি, নয়ত কংক্রিটের করা হোক।
অমর সেতু চন্দনপুর ও মানিকপুর-জঙ্গিপুর মৌজার মধ্যে সংযোগ রক্ষা করছে। অমর সেতুর পাটাতন খুলে যাওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা হেঁটে কিংবা বাইক, সাইকেল নিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। কোনওভাবে পা পিছলে গেলে সোজা খালে পড়ার সম্ভাবনা। এর আগে সেতু থেকে খালে পড়ে একাধিক ব্যক্তি জখমও হয়েছেন। জানা গিয়েছে, ৩৫বছরের বেশি সময় আগে প্রাক্তন প্রধান প্রয়াত অমর মাইতির নামে এই সেতুটি তৈরি হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দাদের সুষ্ঠু যাতায়াতের কথা মাথায় রেখে পঞ্চায়েতের প্রথম প্রধান অমরবাবু উদ্যোগ নিয়ে গাছ কেটে সেতুটি তৈরির ব্যবস্থা করেছিলেন। তারপর থেকে সেতুটির নাম হয়ে যায় অমর সেতু। তারপর যখনই ভেঙে গিয়েছে, তখন পঞ্চায়েত আশু মেরামতির ব্যবস্থা করেছে। অথচ এই সেতুগুলিকে ব্যবহার করে বাদলপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা তো বটেই, পার্শ্ববর্তী এগরা-২ ব্লকের বাসুদেবপুর ও দুবদা পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের লোকজন যাতায়াত করেন। সেতুর ওপারে বাদলপুর পঞ্চায়েতের অধীন গ্রামগুলির পাশাপাশি বাসুদেবপুর ও দুবদা পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের ছেলেমেয়েরা বাদলপুর বিদ্যাভবন ও চন্দনপুর বীরেন্দ্র শিক্ষাসদনে পড়াশোনা করতে আসে। পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান গণেশ মহাকুড় বলেন, আমি ক্ষমতায় থাকাকালীন বেশ কয়েকবার সেতুগুলি মেরামতির ব্যবস্থা করেছিলাম। তবে অমর সেতুর যা অবস্থা, তাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এই এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকটা রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হবে। তাঁদের দুর্ভোগ বাড়বে। আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি। পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, সেতুগুলি নতুন করে তৈরি কিংবা মেরামত করার আর্থিক সংস্থান পঞ্চায়েতের কাছে নেই। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি সেচদপ্তর ও প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে কাছে জানিয়েছি। এবিষয়ে বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আমরা সেচদপ্তরকে বিষয়টি জানিয়েছি। দ্রুত যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেব্যাপারে আলোচনা চলছে।