প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো আঁটপুর আনরবাটি গ্রামের ন্যাড়া কালীপুজো
বর্তমান | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, তারকেশ্বর: জাঙ্গিপাড়ার আঁটপুর আনরবাটি গ্রামে চতুর্দশী তিথিতে হয় কালীপুজো। কিন্তু শ্যামা কালীপুজোর দিন, অমাবস্যায় এই গ্রামে কোনও পুজো হয় না। এই গ্রামের বড় কালী ছাড়াও রয়েছে ন্যাড়া কালীর পুজো। দেবীর চুল থাকে না এখানে।
আনুমানিক ২৫০ বছরের পুরনো আনরবাটি বারুইপাড়ার ন্যাড়া কালীপুজো। কার্তিকের দীপান্বিতা অমাবস্যার পরিবর্তে এখানে পুজো হয় চতুর্দশীতে। কথিত আছে যে, এক সময়ে গ্রামে মহামারী দেখা দিয়েছিল। বর্ধমানের রায়নার এক ব্রাহ্মণ এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামের কলেরা মহামারী থেকে বাঁচতে চতুর্দশীতে কালীপুজোর বিধান দেন। তখন থেকেই বড় কালী সহ প্রায় আটটি পুজো হয় চতুর্দশীতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ন্যাড়া কালীপুজো। শোনা যায়, অতীতে কোনও এক পুজোতে হ্যাজাক থেকে বা অন্য কোনওভাবে দেবি মূর্তিতে আগুন ধরে যায়। পুড়ে যায় দেবীর সাজ-সজ্জা সহ চুল। দেবী স্বপ্নাদেশে পুরোহিতকে জানান, তাঁর মূর্তিতে যেন চুল ও সাজসজ্জা ব্যবহার করা না হয়। এরপর থেকেই ন্যাড়া কালী নামে পরিচিত জাগ্রত এই দেবী। দুই হাত বিশিষ্ট এই দেবী মূর্তির হাতে থাকে না কোনও খাঁড়া। এক হাতে পদ্ম, অন্য হাতে বাটি।
পুজো কমিটির সম্পাদক রঞ্জন দে জানান, পুজো শুরুর প্রকৃত বয়স আমাদের কারও জানা নেই। বংশপরম্পরায় আমরা দেখে আসছি এই পুজো। আনরবাটি গ্রামে অমাবস্যায় শ্যামা পুজা হয় না। চতুর্দশীতে হওয়া প্রত্যেকটি কালীপ্রতিমা দক্ষিণ মুখে বসেন। এই রীতি এই গ্রামেই সীমাবদ্ধ। আঁখ, ছাঁচি কুমড়ো, লেবু, আদা ও ছাগ বলি হয়। পুজোর দিন সকালেই রং হয় প্রতিমার। নারকেলের সন্দেশ তৈরি করে প্রসাদ হিসেবে সকলকে দেওয়া হয়। কথিত আছে, দেবীর কাছে কেউ তাদের মনস্কামনা পূরণের আশা নিয়ে এসে কখনও বিফল হননি। শ্যামা কালীপুজোর আগের দিন চতুর্দশীতে এই পুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকে ভিড় করেন।