• উপনির্বাচনের ভোটপ্রচারে কৌশলে বদল, বড় সভা নয়, ঘরোয়া বৈঠকে জোর দিতে নির্দেশ তৃণমূলের
    আনন্দবাজার | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
  • আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ছয় বিধানসভা উপনির্বাচন। প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর থেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে সব রাজনৈতিক দল। কিন্তু উৎসবের মরসুম চলায় সে ভাবে ভোটের প্রচারে সাড়া পাচ্ছেন না রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। এমন পরিস্থিতি দেখে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ঠিক করেছে, ভোটপ্রচারে বড় জনসভার বদলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভোটপ্রচারের পাশাপাশি ঘরোয়া বৈঠকে জোর দিতে হবে। এই মর্মে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ওই ছয় বিধানসভা উপনির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নেতাদের সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ঘরোয়া বৈঠকের মাধ্যমে এলাকার মানুষের সমস্যার কথা জানতে। সেই সমস্যা জেনে প্রার্থীকেও সেই প্রসঙ্গে অবগত করতে হবে। নির্বাচনে জয় পেলে প্রার্থী সেই সব সমস্যার সমাধান করবেন বলেও ওই ঘরোয়া বৈঠকগুলিতে আশ্বাস দিতে বলা হয়েছে।

    শারদোৎসব চলে গেলেও রাজ্যে উৎসবের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। আগামী ৩১ অক্টোবর রাজ্যে কালীপুজো ও দীপাবলি। তার কিছু দিন পরেই ছট পুজো। এর পর রয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজো এবং রাসপূর্ণিমা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে এই উৎসবগুলি আয়োজিত হয়। তাই এমন উৎসবের আবহে উপনির্বাচনে আমজনতা তো বটেই, তৃণমূল কর্মী মহলেও খানিকটা গা-ছাড়া ভাব লক্ষ করেছেন জেলা স্তরের নেতারা। তাই বড় বড় সভার বদলে ছোট ছোট বৈঠক করে ভোটপ্রচারে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে পিছনে ফেলে দিতে চান তৃণমূলের শীর্ষনেতারা। যদিও, দলের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, ছ’টি আসনের মধ্যে ছ’টি উপনির্বাচনের ফল তাঁদের দখলে আসবে। তাই প্রচার নিয়ে খুব বেশি আড়ম্বর অনর্থক বলেই মনে করছেন জেলা স্তরের নেতাদের একাংশ। কিন্তু প্রয়োজন হলে যে রাজ্যের মন্ত্রী সাংসদদের ওই প্রচারে পাঠানো হবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাড়োয়া বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে একাধিক নেতা দাবি জানিয়েছিলেন। শেষমেশ তৃণমূলের প্রতীক পেয়েছেন প্রয়াত হাজি নুরুল ইসলামের মেজো ছেলে রবিউল ইসলাম। সেখানে যাতে কোনও রকম অন্তর্ঘাত না হয়, সেই কারণে সেই উপনির্বাচনে নজরদারির জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী সুজিত বসু এবং সাংসদ পার্থ ভৌমিককে। নিজের ছেড়ে দেওয়া নৈহাটি বিধানসভা জেতানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পার্থের কাঁধেই।

    ছয় বিধানসভার উপনির্বাচনের মধ্যে একমাত্র মাদারিহাট আসন ছাড়া বাকি সব ক’টি রয়েছে তৃণমূলের দখলে। মেদিনীপুর, তালড্যাংরা, নৈহাটি, হাড়োয়া এবং সিতাই বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়কেরা সাংসদ হয়ে সংসদে গিয়েছেন। তাই এই কেন্দ্রগুলিতে উপনির্বাচন হচ্ছে। মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা আলিপুরদুয়ার লোকসভা থেকে জিতে সংসদের সদস্য হয়েছেন। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক ছিলেন মনোজ। তাই আলিপুরদুয়ার আসনটি জিতে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে ধাক্কা দেওয়াই তৃণমূলের লক্ষ্য। মূলত চা-বাগান নিয়ে তৈরি মাদারিহাট বিধানসভা। তাই দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের মাদারিহাটে থাকা চা-বাগানের শ্রমিকদের নিয়ে ছোট ছোট বৈঠক করে তাঁদের সমস্যার কথা জেনে তা সমাধানের আশ্বাস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)