• বিরোধী দলের ভোটারদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করে তাঁদের মত পাল্টাতে হবে 
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ‘সবাই যে আদর্শগতভাবে বিরোধী দলকে ভোট দেন, তা নয়। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা আমাদের ব্যবহার, কাজকর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে এমন কাজ করেন। আপনি যদি নিজেকে বদলে দিতে পারেন, তাহলে বীতশ্রদ্ধ ভোটারদেরও মতের পরিবর্তন হবে’। রবিবার তৃণমূলের রামপুরহাট বিধানসভার বিজয়া সম্মিলনি ও কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই বুথ স্তরে সংগঠন শক্তিশালী করার পাঠ দিলেন রা঩জ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। রামপুরহাট হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা কোর কমিটির সদস্য এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, লাভপুর বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, বোলপুর সাংসদ অসিত মাল প্রমুখ। এদিনের সম্মিলনীতে বুথ ভিত্তিক দশজন করে কর্মী হাজির হয়েছিলেন। সভার শুরুতেই লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে বিভিন্ন এলাকায় পিছিয়ে পড়া সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি নীহার মুখোপাধ্যায় বলেন, পিছিয়ে থাকার জন্য কর্মীদের দায়ী করা হয়। কিন্তু আমি বলব কর্মীদের সম্মান না দেওয়া ও সঠিক মূল্যায়ন না করার জন্যই আমরা পিছিয়ে পড়ছি। 


    সেই প্রসঙ্গে টেনেই পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, দলের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলেন বুথ কর্মীরা। কারণ, বুথ কর্মীদের সঙ্গেই মানুষের সরাসরি সম্পর্ক। বুথ ভালো না থাকলে আমরা ক্ষমতায় থাকতে পারব না। ৩৪ বছর সিপিএম ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু নিরন্ন, অভুক্ত মানুষের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার কোনও প্রকল্প তারা করেনি। ২০১১ সালের পর সেই মানুষগুলো যাতে ভালোভাবে থাকেন, তার জন্য নানা প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা প্রদান করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু অভুক্ত মানুষ নয়, সর্বস্তরের মানুষের কথা ভেবেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 


    এরপরই মন্ত্রী বুথ কর্মীদের সাংগঠনিক পাঠ দেন। সমস্ত ভেদাভেদ, দ্বন্দ্ব ভুলে সব মানুষের কাছে দিদির উন্নয়নের বার্তা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, আপনার বুথে অন্যদলের সমর্থক থাকতেই পারেন। তিনি হয়তো দিদিকে গালমন্দ করেন। অথচ তিনি রাজ্যের সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা নিচ্ছেন। আপনি হয়তো তাঁকে কী করে শায়েস্তা করবেন, সেটা ভাবছেন। এটা যদি ভাবেন, তাহলে দিদিকে আপনি ভালোবাসেন না। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী সকলের জন্যই প্রকল্প করেছেন। একটা বুথকে একটা পরিবার ভেবে আপনাকে দল চালাতে হবে। যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেন না, তাঁদেরও কাছে টেনে নিয়ে সুখে দুঃখে শামিল হতে হবে। খোঁজ নিয়ে দেখবেন, কোনও প্রকল্পের তিনি সুবিধা পাচ্ছেন না। সেটা পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করবেন। তাহলে দেখবেন আপনাকে বুথে কোনও দল হারাতে পারবে না। আমাদের ভাবনার বদল করতে হবে। শুধু ঢালাই রাস্তা করলাম, উন্নয়ন হয়ে গেল তা নয়। গ্রামকে ভালোবাসতে হবে। 


    গ্রামের ছেলেমেয়েরা স্কুল, আইসিডিএস সেন্টারে যাচ্ছে কি না, নাবালিকা বিয়ে হচ্ছে না কি না, পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে কি না সেস঩ব নিয়েও মানুষের সচেতনতা বাড়িয়ে তুলতে হবে। তবেই প্রকৃত উন্নয়ন। এটাই মুখ্যমন্ত্রী চান। সেই দায়িত্ব আপনাদের পালন করতে হবে। তাহলেই তিনি তাঁর বিরুদ্ধ মতের পরিবর্তন করবেন। 


    অন্যদিকে এখন থেকে বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমে পড়ার বার্তা দেন উপস্থিত মন্ত্রী থেকে সাংসদ, বিধায়ক সকলেই। আশিসবাবুও পরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্যের রেশ টেনে বলেন, কে কোন দল করছেন, দেখবেন না। সকলের কাছে রাজ্যের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি সম্পর্কে বলুন। কেউ বঞ্চিত থাকলে সুবিধা পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করুন। সকলের মতামত নিয়ে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করুন। 
  • Link to this news (বর্তমান)