• ডানার প্রভাবে বৃষ্টিতে বিপুল ক্ষতি সব্জি চাষে, সরকারের কাছে আর্জি
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বেলদা: পুজোর আগে টানা কয়েকদিনের অতিবৃষ্টির পর ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দাঁতনের সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার সব্জি চাষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জোড়া ফলায় নষ্ট হতে বসেছে প্রায় ৮৫ হেক্টর জমির সব্জি। সব্জি চাষে শস্যবিমার সুবিধে না থাকায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষিরা। রাজ্য সরকারকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। 


    দুর্গাপুজোর কয়েকদিন আগে নিম্নচাপের অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল দাঁতনের আলীকষা ও তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী গ্রামের বিভিন্ন সব্জির খেত। নদীর তীরবর্তী এলাকার গ্রামের চাষিরা মূলত সব্জির উপর নির্ভর করে থাকে। বছরের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের সব্জি চাষ করে থাকে এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। নিম্নচাপের প্রভাবে অতিবৃষ্টি ও তার পর ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জোড়া ফলায় বিপুল পরিমাণ সব্জি নষ্ট হওয়ায় আতান্তরে পড়েছে চাষিরা। নষ্ট হয়ে গিয়েছে জমিতে থাকা বেগুন, কুঁদরি, ঝিঙে, চিচিঙ্গা,পটল, ঢ্যাঁড়শ সহ অন্যান্য সব্জি। এই সমস্ত ফসল শস্যবিমার আওতায় না থাকায় সঙ্কটে পড়েছে চাষিরা। বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। 


    রাউতারাপুর গ্রামের বাসিন্দা রামহরি জানা বলেন, লাগাতার বর্ষণে ও ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে খেতে জল জমে এলাকার সব্জি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই সময়ে ফুলকপি, বাঁধাকপি লাগানো হয়েছিল। বৃষ্টির জলে ডুবে সেগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা চাই, সরকার আমাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক। বড়া গ্রামের বাসিন্দা হরিপদ নায়েক বলেন, যেভাবে অসময়ে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে তাতে সব্জি খেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম, তা কীভাবে শোধ করব বুঝে উঠতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, আমাদের সব্জি চাষকে শস্যবিমার অন্তর্ভুক্ত করুন তাহলে আমরা ক্ষতিপূরণ পাব। 


    ব্লক কৃষিদপ্তর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসারে, এবারের বৃষ্টিতে দাঁতন ১ ব্লকের সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী আলীকষা ও তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এলাকায় প্রায় ৮৫ হেক্টর জমির সব্জির ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি সারা ব্লকে ১৪৭৬০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসনের কাছে শীঘ্রই পাঠানো হচ্ছে বলে জানালেন কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক। দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, যেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধানের পাশাপাশি সব্জি চাষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। সব্জি যেহেতু শস্যবিমার আওতার মধ্যে পড়ে না, তাই রাজ্য সরকার যাতে চাষিদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয় তার জন্য আমি নিজে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করব। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)