• বন্ধুদের হাতেই খুন বিষ্ণুপুরের যুবক অপহরণে বাধা দিতেই হত্যা, ধৃত আরও ১
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বিষ্ণুপুর শহরের সঙ্কটতলার যুবক বিপ্লব নাগকে খুনের কিনারা করে ফেলল পুলিস। বিপ্লবকে অপহরণ করে তাঁর বাবার কাছ থেকে মোটা টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ছক কষা হয়েছিল। সেইমতো বন্ধু বিপ্লবকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়েছিল। কিন্তু, বিপ্লবের চিৎকার চেঁচামিচিতেই প্ল্যান ভেস্তে যায়। লোকজন জড়ো হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। রবিবার বাঁকুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার মকসুদ হাসান সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানান। এই খুনের ঘটনায়  পুলিস আগেই বিপ্লবের বন্ধু সুমন লোহারকে গ্রেপ্তার করেছিল। সে বর্তমানে পুলিস হেফাজতে রয়েছে। তাকে জেরা করে শনিবার রাতে শহরের বালিধাবড়া থেকে আকাশ বাউরিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার তাকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাকেও পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়। 


    অতিরিক্ত পুলিস সুপার বলেন, ষষ্ঠীর দিন সুমন ও আকাশ দু’জনে মিলে বিপ্লবকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে অপরহণের পরিকল্পনা করে। কিন্তু, সেই কাজে তারা সফল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত দু’জনে মিলে যুবককে শ্বাসরোধ করে খুন করে। আকাশের কাছে ভোজালি ছিল। তা দিয়ে মাটি খুঁড়ে স্কুল মাঠের ধারে ঝোপের মধ্যে বিপ্লবকে চাপা দিয়ে দেয়। ধৃতরা খুনের কথা স্বীকার করেছে। আকাশের কাছ থেকে বিপ্লবের মোবাইলটি উদ্ধার হয়েছে। 


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপ্লবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। তাঁর একমাত্র ছেলেকে অপহরণ করে মোটা টাকা আদায়ের ছক কষেছিল খাবারের দোকানদার সুমন লোহার। সুমনের দোকানেই বিপ্লব বেশিরভাগ সময় আড্ডা দিতেন। তাই তাঁর ও পরিবারের টাকা পয়সার ব্যাপারে সে আগে থেকেই জানত। তবে সে একা সেই কাজ করতে সাহস পায়নি। পরিকল্পনা কার্যকর করতে স্থানীয় বালিধাবড়ার দাগি আসামি ও একাধিক চুরিতে অভিযুক্ত আকাশকে সঙ্গে নেয়। ষষ্ঠীর দিন পুলিস বা স্থানীয়রা পুজোয় ব্যস্ত থাকবেন। তাই তারা ওই দিনটিকেই বেছে নেয়। বিপ্লবকে হালকা জখম করে শহর থেকে ৬কিলোমিটার দূরে জঙ্গলে বিরসা মুন্ডা হল্ট স্টেশন এলাকায় লুকিয়ে রেখে তার বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। সেইমতো ওইদিন রাত ৯টা নাগাদ সুমন ফোন করে মিশন স্কুলের মাঠে বিপ্লবকে ডাকে। সেখানে দু’জনে মিলে মদ্যপ অবস্থায় বিপ্লবকে প্রথমে মারধর করে। সেই সময় বিপ্লব চিৎকার করে ওঠায় গলা চেপে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। এরপর তারা মৃতদেহটি মিশনস্কুলের পাঁচিলের ধারে টেনে নিয়ে যায়। আকাশের কাছে থাকা ভোজালি দিয়ে ঝোপের মাটি খুঁড়ে চাপা দেয়। ১২দিন পর ২১ অক্টোবর স্থানীয় এক মহিলা ছাতুর খোঁজ করতে পাঁচিলের ধারে গেলে বিপ্লবের পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খোদ শহরের মাঝে খুনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওইদিনই পুলিস সুমনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জেরা করে আকাশের নাম পাওয়া যায়। শনিবার তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।  ধৃতদের নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক পুলিসের। নিজস্ব চিত্র 
  • Link to this news (বর্তমান)