• কাদায় ভর্তি রাস্তা, অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে খাটিয়ায় রোগী নিয়ে চিকিৎসকের কাছে
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা হবিবপুর: দীর্ঘদিন রাস্তা বেহাল। তার উপর দু’দিনের বৃষ্টিতে কাদা হয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স, টোটো চালকরা না আসায় গুরুতর অসুস্থকে খাটিয়ায় চাপিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন পরিজনরা। এই ঘটনার সাক্ষী থাকল মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম মেস্তর পাড়া। 


    স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সাহেব টুডুও রাস্তার বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, দু’দিন বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় অনেকটা কাদা হয়েছে। এর ফলে গাড়ি যাতায়াত করতে পারছিল না। অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলেও আসেনি। তাই খাটিয়ায় বেঁধে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। 


    পঞ্চায়েত সদস্যের আরও দাবি, এই রাস্তা তৈরির জন্য অনেকবার তিনি প্রশাসনের কাছে তদ্বির করেছেন। কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।


    রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে প্রথম খাটিয়ায় চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিরণ হেমরম। তিনি জানান, বৃষ্টির জন্য খারাপ রাস্তা এখন চলাচলের অযোগ্য। গ্রামের মূল রাস্তার পাঁচশো মিটার দিয়ে যাওয়ার সাধ্যি নেই কারও।  শনিবার ভোররাতে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয় প্রতিবেশী কানু হেমরমের। কাছাকাছি ডাক্তারের চেম্বার বলতে সেই ১০ কিমি দূরে বুলবুলচণ্ডী। রোগীকে কাতরাতে দেখে বারবার অ্যাম্বুলেন্সকে ফোন করা হলেও তারা এই খারাপ রাস্তা দিয়ে গ্রামে ঢুকবে না বলে জানিয়ে দেয়।


    কয়েকজন টোটো চালককেও অনুরোধ করা হয়েছিল। তাঁরাও আসতে চাননি। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ নেই বলে জানিয়ে দেন চালকরা। অগত্যা কানুকে খাটিয়ায় বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। 


    কিরণের ছেলে অর্জুন বলেন, চিকিত্সার পর বাবা আপাতত সুস্থ আছেন। বৃষ্টিতে গ্রামের রাস্তা দিয়ে মানুষ যাতায়াতের পরিস্থিতি নেই, সেখানে অ্যাম্বুলেন্স আসবে কী করে। বিদ্যুৎহীন গ্রামে টোটো চলাচলও বন্ধ। বাবাকে ছটফট করতে দেখে বুঝতে পারছিলাম না কী করব। প্রতিবেশীরাই খাটিয়ায় চাপিয়ে বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। প্রশাসনের কাছে আবেদন, দ্রুত রাস্তা ঠিক করার ব্যবস্থা করুন। এমন অসহায় অবস্থার মধ্যে যেন আর কাউকে না পড়তে হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)