শীতের আগমনে বাড়বে কুয়াশা, বাতিল হতে চলেছে পূর্ব রেলের এক গুচ্ছ ট্রেন
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আসন্ন শীতের মরশুমে পূর্ব রেলের এক গুচ্ছ দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হতে চলেছে। চলতি বছর শীতের আগমন দ্রুত ঘটবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এতেই কার্যত সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কর্তারা। ফি-বছর শীতের সময় কুয়াশার কারণ দেখিয়ে ট্রেন বাতিলের তালিকা ক্রমশ লম্বা হয়। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করেন, অ্যান্টি-ফগ ডিভাইসের সৌজন্যে দৃশ্যমানতা সংক্রান্ত সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু ভুক্তভোগী যাত্রী মাত্রই জানেন, বাস্তব পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। এবারও তার কোনও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এই সূত্রেই যাত্রীদের মধ্যে দানা বাঁধছে নয়া শঙ্কা। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র কারণে শিয়ালদহ ডিভিশনে লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখা নিয়ে রেল নিজেই জনমানসে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি তৈরি করে। সেই বিতর্কের রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই শীতের সময় গুচ্ছ ট্রেন বাতিলের ক্ষেত্রে ঘোষণার ক্ষেত্রে ‘ডানা’র সময়ের বিভ্রান্তির পুনরাবৃত্তি হবে না তো? রেলের অন্দরে কান পাতলেও শোনা যাচ্ছে একই প্রশ্ন। এক গুচ্ছ ট্রেন বাতিলের ঘোষণা করতে গিয়ে রেলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ফের বেআব্রু হয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ। রেল বোর্ডের এক কর্তা জানান, ‘ডানা’র মোকাবিলায় পূর্ব রেলের চরম অপেশাদারি মনোভাব নিয়ে সর্বোচ্চ মহল ক্ষুব্ধ। ঝড়ের আগের দিন পূর্ব রেলের একটি বিভাগ কার্যত ইচ্ছাকৃতভাবে গোটা শিয়ালদহ ডিভিশনের সমস্ত লোকাল ট্রেন ১৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। বিষয়টি জানার পর পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে বিভ্রান্তি কাটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) পূর্ব রেলের ওই ঘোষণাকে ‘মিথ্যা’ প্রমাণ করতে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন। সেখানে তিনি শিয়ালদহ সাউথ ও হাসনাবাদ শাখায় লোকাল ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানান। তারপরও পূর্ব রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগ চরম ব্যর্থতার নজির তৈরি করে। সংস্থার অফিসিয়াল গ্রুপে পোস্ট করা লিখিত বিবৃতি ও ভিডিও মুছে দেয় তারা। অথচ ততক্ষণে তা সংবাদ মাধ্যম ও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাবও পড়েনি সংশ্লিষ্ট এলাকায়। ওই রেলকর্তা বলেন, ‘এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় রেলের ভাবমুর্তির দফারফা হয়ে গিয়েছিল। শীত আসছে। আবার অনেক ট্রেন বাতিল হবে। এই কঠিন সময় পূর্ব রেল কীভাবে পার করে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে দিল্লি।’ ফেয়ারলি প্লেসে পূর্ব রেলের সদর দপ্তরের অফিসারদের একাংশের দাবি, জোনের উচ্চ পর্যায়ে সমন্বয়ের অভাব বারবার সামনে চলে আসছে। অথচ অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।