তরুণীর সঙ্গে অশালীন আচরণ সিপিএম নেতা তন্ময়ের, এফআইআর
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এক তরুণী সাংবাদিকের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠল সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। পেশাগত তাগিদেই সাক্ষাত্কার নিতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী সাংবাদিক। তখনই তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে কোলে বসে পড়েন তন্ময়বাবু, সোশ্যাল মাধ্যমে এমনটাই অভিযোগ এনেছেন ওই তরুণী। পরে তিনি বরানগর থানায় এফআইআর দায়ের করেন। এরপরেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। আর জি কর কাণ্ডে বামপন্থীরা ‘ধর্ষণ সংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে পথে নেমেছে, রাত দখল করেছে। কিন্তু দ্রোহের উত্সবে অংশ নিয়ে, অপরাধের বিচার চাওয়া প্রবীণ সিপিএম নেতার এমন আচরণ পার্টির অন্দরেই অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। শাসকদল তৃণমূলও ছেড়ে কথা বলছে না। তারাও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছে। সভ্যপদ থেকে তন্ময়বাবুকে সাসপেন্ড করেছে সিপিএম রাজ্য কমিটি।
ঠিক কী হয়েছে? বিধ্বস্ত অবস্থায় ওই তরুণী সাংবাদিক রবিবার দুপুরে সোশ্যাল মাধ্যমে ‘লাইভ স্ট্রিমিং’য়ে বলেন, ‘আজকে উনি আমার কোলে বসে পড়েন। তখনই বলি, এগুলো পছন্দ করি না। আগের সাক্ষাৎকারে নজরে করেছিলাম গায়ে হাত দিয়ে কথা বলার একটা প্রবণতা ওঁর আছে। এসব আচরণ আমার পছন্দ হয়নি। আজ যখন ঘটনাটা ঘটল, তখন ক্যামেরা অন থাকলে ভালো হতো।’ অর্থাত্ পেশার তাগিদে তন্ময়ের কাছে গিয়ে অশালীন আচরণের শিকার হলেন তরুণী। তাও আবার ‘জাস্টিস’ চেয়ে গলা ফাটানো সিপিএম পার্টির নেতার কাছেই। তরুণীর অভিযোগে তন্ময়বাবু বলেছেন, ‘আমি স্তম্ভিত! বুঝতেই পারছি না কী বলব! মেয়েটি আমার বাড়িতে সাক্ষাত্কার নিতে অন্তত ১৫ বার এসেছেন। এর আগে যদি তাঁর অমন মনে হয়, তাহলে এদিন কেন এলেন? যাওয়ার সময় কিছু বলেননি, পরে শুনলাম এসব করেছেন। এটা ঠিক কোন উদ্দেশ্যে করা হল জানি না।’ তন্ময়বাবুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আসার পরেই পার্টির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
সন্ধ্যায় মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘সাংবাদিক তাঁর কাজ করতেই তন্ময়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। এই ধরনের কোনও অভিযোগ এলে সিপিএম গুরুত্ব দিয়ে দেখে। আমাদের ইন্টারনাল কমপ্লেন্ট কমিটি (আইসিসি) আছে। পেশাগত কাজ করতে গিয়ে যা হয়েছে, তা গর্হিত। পার্টি কখনওই সমর্থন করে না। আইসিসি যা প্রস্তাব দেবে, গ্রহণ করব।’ এই বিষয়ে তন্ময়বাবু বলেন, ‘রাজ্য সম্পাদক ঠিকই বলেছেন। বিষয়টি আইসিসিতে যাওয়া উচিত। আমাকে ডাকলে আমি যাব।’ এই গোটা ঘটনা পার্টির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে বলেও কবুল করেছে রাজ্য কমিটি।
এদিকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘পুরো তদন্ত হোক। সত্য হলে তন্ময় ভট্টাচার্যকে গ্রেপ্তার করুক পুলিস।’ তৃণমূলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘ভাবতে লজ্জা লাগে, এরাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল, ছিঃ!’