মণ্ডপের কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয়ে পাণ্ডুয়ার উদ্যোক্তারা
বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ‘ডানা’র দাপটে হুগলির পাণ্ডুয়ায় কালীপুজোর থিমের মণ্ডপ সময়ে শেষ করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। শনিবারের পরে রবিবারও হুগলিতে আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল। দু’দিনই রোদ উঠেছিল। কিন্তু কালীপুজোর গ্রাম পাণ্ডুয়ায় মণ্ডপসজ্জার কাজে কার্যত হাতই দেওয়া যায়নি। ‘ডানা’র দাপটে দু’দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে অনেক ক্ষেত্রেই নির্মীয়মাণ মণ্ডপ ভিজে গিয়েছিল। কোথাও কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল থিমের মণ্ডপ থেকে প্রতিমা। অনেক পুজো উদ্যোক্তাই আলোর উৎসবে আলোকসজ্জার তোরণই বেঁধে উঠতে পারেননি। অথচ বৃহস্পতিবারই মণ্ডপসজ্জা শেষ করার চ্যালেঞ্জ সামনে এসে পড়েছে। এই অবস্থায় অসমাপ্ত মণ্ডপেই পুজো করতে হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
তবে একটি বিকল্প প্রয়াস পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফে শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পুজোর ভাসানের শোভাযাত্রা আগামী রবিবারের বদলে সোমবার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত মণ্ডপসজ্জার কাজ করার সময় মিলবে। পাশাপাশি, বহুমূল্যের থিমের মণ্ডপ ও প্রতিমাও দর্শকরা রবিবার পর্যন্ত দেখার সুযোগ পাবেন। পাণ্ডুয়ার স্থানীয় প্রশাসন এখনও সেই প্রস্তাবে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। ফলে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় থিম সম্পূর্ণ করার চেষ্টার মধ্যেই আজ, সোমবার জেলাশাসকের দারস্থ হতে চলেছেন পুজোর উদ্যোক্তারা।
পাণ্ডুয়া কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির কর্তা সঞ্জয় ঘোষ, মাধব ঘোষ বলেন, ২৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মণ্ডপের কাজই করা যায়নি। এরপর দু’দিন আবহাওয়া ভালো থাকলেও ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেওয়ার কাজ করতে হয়েছে। সব পুজো উদ্যোক্তা সেটাও করে উঠতে পারেননি। এই অবস্থায় ৩১ অক্টোবর অর্থাৎ পুজোর দিন থিমের মণ্ডপগুলি সাজানোর কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা ভাসানের নির্ঘণ্ট পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছি। বহু টাকা ব্যয় করে উদ্যোক্তারা প্রতিমা, মণ্ডপ, আলোকসজ্জা তৈরি করেছেন। তা দর্শক ভালোভাবে দেখতে না পেলে, আফশোসের শেষ থাকবে না। জেলা প্রশাসনকেও সমস্যা জানানো হয়েছে। আজ, জেলাশাসকের কাছে আমরা যাব। দেখা যাক কী হয়।
হুগলির জেলার মধ্যে পাণ্ডুয়াতে সবচেয়ে বেশি থিমের কালীপুজো হয়। অন্যান্য ব্লক বা পুরসভায় একটি বা দু’টি বড় আকারের পুজো হয়। সেখানেই পাণ্ডুয়াতে কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির অন্তর্গত পুজোর সংখ্যাই ৪৬টি। যার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ পুজোতে বিরাট আয়োজন থাকে। কিন্তু এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সেই পুজোর আয়োজনে ব্যাঘাত ঘটেছে। দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরে সময়ে পুজোর আয়োজন শেষ করা নিয়ে বিরাট উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আবার, পুজোকে ঘিরে প্রতিবছর কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজিত প্রতিযোগিতা থাকে। নিয়ম মোতাবেক পুজোর রাতেই বিচারকরা ঘুরে ঘুরে সেরা প্রতিমা, মণ্ডপ বা আলোকসজ্জা নির্বাচন করেন। বৃহস্পতিবার মণ্ডপসজ্জার কাজই শেষ না হলে সেই প্রতিযোগিতা কেমন করে হবে, সেই প্রশ্নও উঠছে। সব মিলিয়ে আতান্তরে পড়েছেন আয়োজকরা। নিজস্ব চিত্র