• চলতি বছর নাও হতে পারে প্রাইমারি টেট, ইঙ্গিত পর্ষদ সভাপতির
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ২০১৬ সালের পর রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন কোনও পরীক্ষা নেয়নি। লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী দিন গুণছেন, ঠিক কবে রাজ্যের হাইস্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হবে। এসএসসি না হলেও গত কয়েক বছরে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছিলেন, প্রতি বছর টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাই দ্রুত নিয়োগের আশায় অনেক চাকরিপ্রার্থীই ডিএলএড করে প্রাথমিক টেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু এবার প্রাথমিক টেট পরীক্ষা নিয়েও টানাপোড়েন তৈরি হল।

    প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল সম্প্রতি বলেছেন, ‘আগে দ্রুত নিয়োগ করতে হবে। তারপরই নেওয়া হবে পরীক্ষা।’ এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, ২০২২ ও ২০২৩ সালে টেট পরীক্ষা নেওয়া হলেও উত্তীর্ণদের এখনও নিয়োগ করতে পারেনি পর্ষদ। গৌতমবাবুর এহেন মন্তব্যের পর জল্পনা তৈরি হয়েছে, আদৌ ২০২৪ সালে প্রাইমারি টেট পরীক্ষা হবে তো। এনিয়ে অবশ্য সরাসরি কিছু জানায়নি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সূত্রের খবর, আগের টেট পরীক্ষাগুলির নিয়োগ প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে তবেই নতুন পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছে পর্ষদ।

    গৌতম পাল বলেন, অনেকেই বলছেন পর্ষদ সভাপতি আগে বলেছিলেন, প্রতিবছর নিয়োগ পরীক্ষা নেবে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যদি ঘন ঘন মামলা হয়, তাহলে বোর্ড কীভাবে তার প্রতিশ্রুতি রাখবে।

    ২০২২ সালে টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী। দেড় লক্ষ প্রার্থী সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তার আগেই ২০২৩ সালে টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়। যদিও সেই পরীক্ষার রেজাল্ট এখনও প্রকাশ করা হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রের খবর, কিছু আইনি জটিলতা ছিল। সেই কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলো আটকে আছে। এর আগে ২০১৭ সালের টেটের ওপর ভিত্তি করে ২০২১ সালে ৭ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়।

    পর্ষদের এহেন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, বেকার যুবকদের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করছে রাজ্য সরকার। বাংলায় কোনও চাকরি নেই। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। এটা নতুন কিছু নয়, আগে দেখুন আরও কী হতে চলেছে।

    সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়োগ দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে আছে। আদালত এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করলে কোনও নিয়োগ হবে না। রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা টেট সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে অন্যান্য রাজ্যেও দরখাস্ত করতে পারেন। তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলারা যুবরা। রাজ্য সরকারের দুর্নীতির জেরে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলায়।

    প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়ানোর যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা হল প্রাইমারি টেট। উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বরের পাশাপাশি ডিএড বা ডিএলএড করা থাকলে এই পরীক্ষায় বসা যায়। মোট ১৫০ নম্বরের পরীক্ষায় শিশু বিকাশ ও মনস্তত্ব, প্রথম ভাষা, ইংরেজি, ইংরেজি, অঙ্ক, পরিবেশবিদ্যা – এই বিষয়গুলির প্রতিটি থেকে ৩০টি করে প্রশ্ন থাকে। এই পরীক্ষায় পাস করার পর মেরিট লিস্ট বানানো হয়। তারপর ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)