হাতে আর বেশি সময় বাকি নেই। সামনেই কালীপুজো, দীপাবলি এবং ধনতেরাস। এই দিনে সোনার গয়না কেনার একটা রীতি আছে। আপামর বাঙালি সেটা পাল করে থাকেন। তাই ধনতেরাসের সময়ে গয়নার দোকানে ভিড় দেখতে পাওয়া যায়। আর এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা। সোনার দোকানে ডাকাতি, লুঠপাটের খবর সামনে চলে আসে। সুতরাং উৎসবের মরশুমে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়। এবার যাতে এমন কোনও অপরাধ না ঘটে তার জন্য উদ্যোগী হয়েছে বারাসত জেলা পুলিশ। কলকাতায় এমন ঘটনার নজির খুব কম। জেলাগুলিতে পুলিশ নির্দেশ দিয়েছে, ছোট–বড় প্রতিটি সোনার দোকানে বাধ্যতামূলক সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। সব সোনার দোকানে সকাল–রাত পর্যন্ত নিরাপত্তারক্ষী রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোনারপুর, বারাসত, মধ্যমগ্রাম, বর্ধমান, হাবড়া, অশোকনগরে একাধিক সোনার দোকান আছে। ধনতেরাসে সেসব জায়গায় মানুষের ভিড় বাড়ে। সোনার গয়নার শোরুমে তখন ‘টার্গেট’ করে দুষ্কৃতীরা। এমনকী দুপুরের দিকে সোনার দোকানগুলিকে টার্গেট করা হয়। তাই বাড়তি নজরদারি তখন করতে বলা হয়েছে। উচ্চমানের সিসি ক্যামেরা বসাতে বলা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার মনিটর দোকানের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে ভিতরে কোনও বিপদ ঘটলে বাইরে বসে তা দেখা যায়। দ্রুত পুলিশকে খবর দেওয়া যায়। আর বলা হয়েছে, দোকানে ঢোকার ক্ষেত্রে মুখে মাস্ক বা মাথায় হেলমেট পরে যাতে কেউ না ঢোকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে দোকানের নিরাপত্তারক্ষীকে।
ধনতেরাসের সময় মানুষ এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যায়। সেখানের সোনার দোকানগুলিতে ভিড় জমান। কালীপুজোর আগে শহরের মানুষ শহরতলিতে পুজো দেখতে যান। সোনার দোকানেও ভিড় হয়। ফলে দু’দিক দিয়ে চাপে থাকে পুলিশ। এই দুষ্কৃতী তাণ্ডব ঠেকাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে দোকানিরা। পুলিশের পরামর্শ মেনে গয়নার দোকানের মূল ফটক বন্ধ রাখা থাকবে। নিরাপত্তারক্ষীরা ক্রেতাদের তল্লাশি করে সোনার দোকানের ভিতরে ঢুকতে দেবেন। হেলমেট এবং মাস্ক পরা থাকলে কাউকে দোকানে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
পুলিশের নির্দেশিকা সোনার দোকানগুলিতে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। সেই মতো ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এই বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার স্পর্শ নীলাঙ্গি বলেন, ‘পুলিশ জেলার সদর শহর বারাসত, মধ্যমগ্রাম, হাবড়া এবং অশোকনগরে সোনার গয়নার নানা নামী শোরুম রয়েছে। তাই আগাম এই বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবনের সুরক্ষায় বড় সোনার দোকানগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে। ধনতেরাসের দু’দিন থাকবে বাড়তি পুলিশ। পিঙ্ক মোবাইল, উইনার্স টিমও থাকবে। সোনার দোকানে ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরা চালু রাখতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা যেন বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখে।’