তার আগে অভিযোগকারী মহিলার বয়ান সংগ্রহ করে নিচ্ছে বরাহনগর থানা। আগামী পরশু তন্ময়কে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের আগে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাইছে পুলিশের তদন্তকারী দল। মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ, তন্ময় তাঁর কোলে বসে পড়েছিলেন সাক্ষাৎকারের আগে। যদিও সিপিএম নেতার দাবি, ওই মহিলা সাংবাদিক মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। সোমবার বিকেলে থানা থেকে ফিরে তন্ময়ের বক্তব্য, তাঁর ওজন ৮৩ কেজি। তিনি মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়েছেন বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা যদি সত্যি হয়, তা হলে কি ওই মহিলা সাংবাদিক সুস্থ থাকতে পারতেন? ওই মহিলা সমাজমাধ্যমে যে অভিযোগ তুলেছেন, তার কিছুই ঘটেনি বলে দাবি তন্ময়ের।
মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়ার অভিযোগটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে রবিবার দুপুরে। ওই সাংবাদিক নিজেই সমাজমাধ্যমে লাইভে এসে এই অভিযোগ তোলেন। তার পর সেটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। অস্বস্তিতে পড়তে হয় বাম নেতৃত্বকেও। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ঘোষণা করেন, তন্ময়কে দল থেকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “তন্ময় গর্হিত কাজ করেছে। তা সিপিএম দল হিসাবে কোনও ভাবেই সমর্থন করে না। কেউ এটাকে ভাল চোখে দেখবেন না। আমরা এগুলোকে ক্ষমার চোখে দেখি না।” তন্ময়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দলের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি (আইসিসি) খতিয়ে দেখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির প্রস্তাবের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ করবে দল।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই তৃণমূল, বিজেপি উভয় পক্ষই সরব হয়েছে। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সরাসরি তন্ময়কে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন। এই বিষয়ে সিপিএমের অবস্থান কী বলেও খোঁচা দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার এই বিষয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তৃণমূলের শাসনে নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই বিরোধীদের নিরপেক্ষ তদন্ত চাওয়া উচিত। অবশ্য সিপিএম বিরোধী দল কি না আমার জানা নেই।”
এই আবহেই সোমবার অভিযোগকারী মহিলা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “কোনও রাজনৈতিক দল কারও বিচার করতে পারে বলে আমি মনে করি না। তা হলে দেশ জুড়ে সালিশি সভা করেই সব সমস্যার সমাধান করে দেওয়া যেত। আইন-আদালতের প্রয়োজন পড়ত না।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে আশা করি। এটা রাজনীতি করার সময় নয়, সমাজ সংস্কারের সময়।”