• তিন রূপে পূজিত হন আরামবাগের সিদ্ধেশ্বরী মা
    বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • রামকুমার আচার্য, আরামবাগ: আরামবাগের গৌরহাটিতে রাধার পাড়ের মা সিদ্ধেশ্বরীকালী সারা বছর তিন রূপে পূজিত হন। শ্মশানে প্রতিষ্ঠিত মাকে জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিনি কালীরূপে পুজো করা হয়। মাঘ মাসে রটন্তী কালী হিসেবে পূজিত হন। এছাড়া কার্তিক মাসে শ্যামাকালী রূপে পুজো পান দেবী। তবে নিত্য পুজোও হয় এখানে। গৌরহাটি গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবার শতাধিক বছর ধরে এই পুজো করে আসছেন। 


    পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এক সময় কেষ্ট নামে এক সাধু রাধার পাড়ে মায়ের প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছিটে বেড়ার ঘর করে মায়ের পুজো করতেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুল, চাল সংগ্রহ করে নৈবেদ্য দিতেন কেষ্ট সাধু। তাঁর প্রয়াণের পর গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবার এখানকার কালী পুজো করে আসছেন। সিদ্ধেশ্বরী কালীর এই মূর্তি আগে মাটির ছিল। পরে সিমেন্টের করা হয়। বর্তমানে সেখানে মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। তাই পটে পূজিত হচ্ছেন দেবী। 


    ভট্টাচার্য পরিবারের বর্তমান সদস্য অশোক ভট্টাচার্য বলেন, একসময় এই মন্দিরের পথ বেশ দুর্গম ছিল। তবু মাকে নিত্য পুজো করতেন বাবা। এখন আমরা তিন ভাই বছরভর পালা করে পুজো করছি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দুই ভাই অনন্ত ভট্টাচার্য ও অচিন্ত্য ভট্টাচার্যও পালা অনুযায়ী পুজো করেন ধুমধাম করে। 


    পরিবারের সদস্যরা বলেন, দেবী খুবই জাগ্রত। তাই ভক্তদের আনাগোনাও রয়েছে বিপুল। ভক্ত ছড়িয়ে আছেন রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অনেকে মানত করেন। সেইমতো ছাগ বলি হওয়ার রীতি রয়েছে। এছাড়া এখানকার দেবীর পুজোয় ঘট স্থাপন, চক্ষু দান, প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় না। তবে মূর্তির প্রতি বছর অঙ্গ রাগ হয়। মায়ের প্রসাদে দেওয়া হয় অন্ন ও পরমান্ন। এজন্য বিশেষ পুজোতে দেওয়া হয় খিচুড়ি, নানা রকমের ভাজা, চাটনি, পায়েস প্রভৃতি। এখানে দেবীর পুজো রাতে হয়। এক রাতেই আবার শেষ হয় পুজো। পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে পুরোহিত পুজো করেন। কিন্তু, এখন মন্দির সংস্কার হচ্ছে বলে ওই আসন ব্যবহার করা হয় না। এখানকার মূর্তির বিসর্জনও হয়না। ভট্টাচার্য বাড়ির সদস্যা শ্যামলী ভট্টাচার্য বলেন, ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমরা এই পুজো করে আসছি। গ্রামের বাসিন্দারাও পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। দেবীর প্রসাদও বিলি করা হয় গ্রামে। আরামবাগের গৌরহাটিতে এই কালী পুজো ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও ভক্তি অটুট রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)