ডানায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির বিমা করাতে গ্রামে ক্যাম্প করার নির্দেশ ডিএমের
বর্তমান | ২৯ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’য় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে দাঁড়াতে পদক্ষেপ নিল জেলা প্রশাসন। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ কৃষিদপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। চাষিদের বিমার আওতায় আনতে তিনি প্রত্যন্ত গ্রামেও ক্যাম্প করার নির্দেশ দিয়েছেন। কৃষিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ায় গোবিন্দভোগ ধানগাছের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়ছে। দক্ষিণ দামোদরে এই ধান চাষ হয়। সমস্ত চাষিকে সরকার বিমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই কারণেই জেলাশাসক এলাকায় এলাকায় মোবাইল ক্যাম্প বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাশাসক বলেন, এখনও বেশকিছু চাষি শস্য বিমা করেননি। তাঁদের সুবিধার জন্য কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মোবাইল ক্যাম্প করবেন।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডল বলেন, চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সব্জির বীজ দেওয়া হবে। তবে জেলায় সব্জি চাষে সেভাবে ক্ষতি হয়নি। তারপরও সরকার বিনামূল্যে বীজ দিয়ে চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ডানা’র প্রভাবে পূর্ব বর্ধমানের ৩৩ হাজার ২৭২ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ২৯১ জন চাষি বিমার জন্য আবেদন করেছেন। এক আধিকারিক বলেন, অনেকেই ভাগে চাষ করেন। তাঁরাও বিমার জন্য আবেদন করতে পারেন। তারজন্য তাঁদের জমির মালিকের কাছে থেকে নথি আনতে হবে। ওই ব্যক্তি জমি চাষ করেন বলে মালিক লিখে দিলে তাঁকে সহজেই বিমার আওতায় আনা যাবে। অনেক মালিক বর্গাদার বা ভাগচাষিদের সেই নথি দিতে রাজি হচ্ছে না। তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। এই নিয়ম কিছুটা শিথিল করা যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেও বিমা করতে চাষিরা অনীহা প্রকাশ করতেন। কিন্তু বিগত দু’বছরে ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিরা মোটা অঙ্কের টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তারপর থেকেই চাষিদের মধ্যে বিমার করার জন্য উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
কিন্তু বিভিন্ন কারণে বহু চাষি এখনও বিমা করতে পারেননি। কয়েক দিন আগেই ডিভিসির ছাড়া জলে জেলায় বহু জমি প্লাবিত হয়েছিল। সেই চাষিরা মাঠের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এরমধ্যে ‘ডানার’ প্রভাবে আবার ধানজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার চাষিদের মাঠের কাজে নামতে হয়েছে। তাঁরা ব্লকের ক্যাম্পে আসতে পারছেন না। ধান জমি বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু গ্রামে মোবাইল ক্যাম্প করা হলে তাঁরা সহজেই বিমা করতে পারবেন।
জেলাশাসক বলেন, চাষিদের সুবিধার জন্য সবরকম পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কৃষি আধিকারিকরা মাঠ ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করেছেন। কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বিমা সংস্থার আধিকারিকরাও মাঠ ঘুরবেন। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ পেতে সমস্যা হবে না। - নিজস্ব চিত্র